সাতক্ষীরায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ৭ দফা দাবিতে নারীদের মানববন্ধন
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:২৮
ছবি : বাংলাদেশের খবর
নদী ভাঙ্গন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সাত দফা দাবিতে সাতক্ষীরার আশাশুনিতে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুই শতাধিক নারী মানববন্ধন করেছেন। উপজেলা চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রতাপনগর এলাকার জলবায়ু স্থানচ্যুত পরিবার ও নিরাপদ আশ্রয়ের অধিকারসহ নানা দাবির কথা তুলে ধরা হয়।
কর্মসূচিতে নারী নেতৃত্বে আগতরা নিম্নলিখিত সাত দফা দাবি করেন :
-
জলবায়ু-অভিবাসিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রণয়ন করে সরকারী সহায়তার আওতায় আনা।
-
নিরাপদ আবাসন, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধি মূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী গ্রহণ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান।
-
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচী (ভিজিডি, ভিজিএফ, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা, বয়স্ক ভাতা ইত্যাদি) প্রদানে অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা।
-
অভ্যন্তরীণ অভিবাসিদের পুনর্বাসনের জন্য টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
-
নদী ভাঙ্গন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
-
সুপেয় পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
-
স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সচেতনমূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি।
প্রতাপনগর এলাকার নিলুফা খাতুন, আবু মুসা, রহিমা খাতুন ও ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘আশাশুনি উপজেলা অত্যন্ত দুর্যোগ প্রবণ। উপজেলার দক্ষিণ সীমানা সুন্দরবনের কাছাকাছি অবস্থিত। বিগত বছরগুলোতে আমরা বিভিন্ন ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করেছি, যেমন আইলা, সিডর, বুলবুল, আম্ফান, ফনি, ইয়াস এবং সম্প্রতি রেমাল। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে এই অঞ্চলে প্রতি বছর বিভিন্ন দুর্যোগ ঘটে। লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও নদী ভাঙ্গনের কারণে অনেক পরিবার বসতভিটা হারিয়ে শহরের বিভিন্ন বস্তি ও অভ্যন্তরীণ অভিবাসনে বাধ্য হচ্ছে। এতে তাদের জীবিকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
ক্ষতিগ্রস্ত মীর আবু বকর বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতাপনগরের মানুষ শহরে চলে যেতে বাধ্য হয়। সেখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হলে তারা পুনরায় গ্রামে ফিরে আসে। কিন্তু গ্রামে ফিরে আবার বন্যার কবলে পড়ে। একের পর এক দুর্যোগে মানুষ সবসময় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই দ্রুত একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি আমাদের।’
মানববন্ধনে নদী ভাঙ্গন কবলিত প্রতাপনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাসের সহযোগিতায় পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
উপস্থিত ছিলেন নিলুফা খাতুন, আবু মুসা, রহিমা খাতুন, ফাতেমা খাতুন, সাংবাদিক মীর আবু বকর, অঞ্জলি বিশ্বাস ও কারিতাস বাংলাদেশ খুলনা অঞ্চলের প্রোগ্রাম অফিসার ডা. সুমন কুমার মালাকার।
পরে সাত দফা দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
আব্দুস সামাদ/এআরএস

