প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ঘেরা পর্যটনসমৃদ্ধ পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে দিন দিন বাড়ছে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আগমন। সম্প্রতি বগালেক, কেওক্রাডং, তমাতুঙ্গীসহ জেলার অধিকাংশ পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় শীতের শুরু থেকে জনপ্রিয় স্পটগুলোতে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তবে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সেবার মান সমানভাবে বাড়েনি। এ কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা। পরিবহনে ভাড়া কমানো, হোটেল ও রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন খাতে সেবার মান উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছেন পর্যটকরা।

পর্যটকরা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় পরিবহন খাতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, যা দূরত্বের সঙ্গে কোনো সামঞ্জস্য রাখে না। স্থানীয় ও বাইরে থেকে আসা গাড়ির চালকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া নির্ধারণ করছেন। হোটেল ও রেস্টুরেন্টের সেবার মানও পর্যাপ্ত নয়। রুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ঘাটতি, অস্বচ্ছ বুকিং প্রক্রিয়া ও খাবারের অতিরিক্ত দাম বিষয়েও পর্যটকরা অসন্তুষ্ট।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আশরাফুল বলেন, ‘বান্দরবানের প্রকৃতি অসাধারণ, কিন্তু সেবার মান হতাশাজনক। অতিরিক্ত ভাড়া ও হোটেলে পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়া আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করছে। আমরা চাই হোটেলের ভাড়া কমানো হোক, সেবার মান বৃদ্ধি পোক এবং খাবার মানসম্পন্ন পরিবেশিত হোক।’

বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শীতের শুরুতেই পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা পর্যাপ্ত সেবা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছি এবং বিভিন্ন সময়ে ডিসকাউন্টও দিই। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার হাসান ইকবাল চৌধুরী স্বীকার করেছেন, ‘পর্যটকদের হয়রানি, হোটেলে অপর্যাপ্ত সেবা ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ আসে। যদি পর্যটক অভিযোগ দেন, তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হোটেল মালিক, পরিবহন ও রেস্টুরেন্ট সমিতির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সেবার মান বৃদ্ধি করা হবে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন নগরী হিসেবে বান্দরবানের সুনাম ধরে রাখতে সেবার মান উন্নয়ন জরুরি। তা না হলে পর্যটকদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নষ্ট হয়ে পর্যটন শিল্পের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

এআরএস