গাজীপুরের শ্রীপুরে গাড়ারণ খলিলিয়া বহুমুখী ফাজিল মাদ্রাসার ৬ শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্ত সিয়ামকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

রোববার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীপুর–বরমী আঞ্চলিক সড়কের ঘুণ্টিঘর এলাকায় তারা সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধনে অংশ নেন। এসময় প্রায় ৪০ মিনিট ধরে দুটি আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে পুলিশ ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে নিয়ে যায়। এসময় শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা সুপার ও সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে ছয়জন গুরুতর আহত হলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। দ্রুততম সময়ে অভিযুক্ত সিয়ামকে গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীপুর–সাতখামাইর–বরমী সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন শুরু হলে উভয়মুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ক্যাম্পাসে নিয়ে যান।

আহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়নি এবং থানা বা প্রশাসনকে জানায়নি। তারা বলেন, ‘এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের সহপাঠীরা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকলেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করেনি। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অভিযুক্ত সিয়ামকে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কার করা না হলে ক্লাস বর্জনের হুমকি দেন শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, ‘ঘটনার পরেও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেছে। তারা ন্যায়বিচারের স্বার্থে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।’

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের উত্তেজনা কমাতে কাজ করছি এবং ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।’

মাদ্রাসার সভাপতি ফজলুল ওয়াহাব জানান, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করা হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’

আউর রহমান সোহেল/এনএ