চরফ্যাসনে আগাম শিম চাষে স্বর্জন পদ্ধতির জনপ্রিয়তা বাড়ছে
এম ফাহিম, চরফ্যাসন (ভোলা)
প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:০৩
ভোলার চরফ্যাসন উপজেলায় স্বর্জন পদ্ধতিতে চাষ করা আগাম জাতের শিম তুলছেন কৃষক। ছবি : বাংলাদেশের খবর
ভোলার চরফ্যাসন উপজেলায় ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্বর্জন পদ্ধতিতে আগাম জাতের শিম চাষ। চারদিকে নদীবেষ্টিত এই অঞ্চলে বর্ষা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে অনেক সময় জমি দীর্ঘদিন পানি আটকে রাখে, ফলে মৌসুমি চাষ বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে স্বর্জন পদ্ধতি—উঁচু বেড বা কূপ তৈরি করে সবজি উৎপাদন—কৃষকদের কাছে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে।
বিশেষ করে আগাম জাতের শিম চাষে এই পদ্ধতি এখন লাভজনক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, স্বর্জন পদ্ধতিতে পানি নিষ্কাশন সহজ, মাটির উর্বরতা বজায় থাকে এবং গাছের শিকড় ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়।
ফলে গাছ দ্রুত বড় হয় এবং আগাম সময়ে ফলন পাওয়া যায়। বাজারে আগাম শিমের চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা তুলনামূলকভাবে বেশি লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে আসলামপুর, ওমরপুর, চর মাদ্রাজ, আমিনাবাদ, এওয়াজপুর, জিন্নাগড় ও হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে কৃষকরা রুপবান জাতের আগাম শিম চাষাবাদ করছেন।
লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৫ হেক্টর, তবে কৃষকরা ৪২৫ হেক্টর জমিতে চাষ করেছেন। প্রায় ৮০০ কৃষক এই চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। শীতের শুরুতে প্রতি কেজি শিম ১৫০ টাকা করে বিক্রি হলেও বর্তমানে দাম ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষক আবু তাহের বলেন, ‘এক সময় স্বর্জন পদ্ধতি ছাড়া সবজি চাষ করতাম, কখনো লোকসান, কখনো লাভ। এখন পুরো বছরেই স্বর্জন পদ্ধতিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করছি।
এ বছরই ২৪০ শতাংশ জমিতে রুপবান জাতের আগাম শিম চাষ করেছি। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকার খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হলে প্রায় ১০ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারব।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা জানান, ‘চরফ্যাসন সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত। স্বর্জন পদ্ধতিতে বছরব্যাপী প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হচ্ছে। শীতকালীন সবজির মধ্যে রুপবান জাতের আগাম শিম চাষাবাদ কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। এই পদ্ধতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।’
এআরএস

