ফেনীতে ঘোড়ার গাড়িতে ইমাম মাওলানা আবু বক্করকে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। ছবি : বাংলাদেশের খবর
ফেনীতে ঘোড়ার গাড়িতে ইমাম মাওলানা আবু বক্করকে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের শিবপুর দোস্ত মোহাম্মদ মিয়াজি জামে মসজিদের ইমামকে ক্রেস্ট, নগদ টাকা, মানপত্র ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। পরে ঘোড়ার গাড়িতে মাওলানা আবু বক্করকে নিয়ে আনন্দ মিছিল করা হয়।
জানা গেছে, জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু বক্কর সকালে মোক্তবে এলাকার ছোট ছেলে-মেয়েদের কোরআন পাঠদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি শুরুতে মসজিদ থেকে কোনো প্রকার সম্মানী বা বেতন নিতেন না।
মাওলানা আবু বক্কর ১৯৭২ সালে শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি ইসলামী শিক্ষায় আগ্রহী ছিলেন। প্রাথমিক পড়াশোনার পর ‘লস্কর হাট ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসা’ থেকে ১৯৮৭ সালে দাখিল এবং ১৯৮৯ সালে আলিম পাস করেন। পরে ফেনী আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ১৯৯১ সালে ফাজিল এবং ১৯৯৩ সালে কামিল শেষ করেন।
১৯৯৬ সালে তিনি শিবপুর দোস্ত মোহাম্মদ মিয়াজি জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। প্রথমদিকে মসজিদ থেকে কোন সম্মানী নিতেন না। মসজিদের জমি-জমার চাষাবাদ করে জীবন চলতেন। গত চার বছর ধরে তাকে মাসে ৪ হাজার টাকা সম্মানী প্রদান করা হতো।
এলাকাবাসীর প্রতি তার ভালোবাসা, ধৈর্যশীলতা ও আন্তরিক ব্যবহারের কারণে তিনি সবার কাছে অত্যন্ত সম্মানিত। শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত কারণে গত ২৮ নভেম্বর দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। বিদায়ের অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ছাত্র, তরুণ, যুব সমাজ ও প্রবাসীদের উদ্যোগে ক্রেস্ট, মানপত্র, উপহার সামগ্রী, নগদ সাড়ে ৫ লাখ টাকা এবং ঘোড়ার গাড়ি র্যালি আয়োজন করা হয়।
মাওলানা আবু বক্কর বলেন, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্মান পেয়েছি। আপনারা আমার আগামীর পথচলার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ তায়ালা যেন আমার ইলম, আমল ও জীবনকে আরও বরকত দান করেন।
এলাকাবাসীর পক্ষে আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের গুণিজন শ্রদ্ধেয় মাওলানা আবু বক্কর সাহেবকে আমরা সন্মানিত করে বিদায় দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। তিনি অত্যন্ত মানবিক ও ধার্মিক মানুষ ছিলেন এবং খুব স্বাভাবিক জীবন যাপন করতেন। এলাকার মানুষের ভালোবাসা, ধৈর্যশীলতা ও আন্তরিকতার কারণে তিনি সবার কাছে অত্যন্ত সম্মানিত হয়ে উঠেছেন।
এম. এমরান পাটোয়ারী/এমবি

