Logo

সারাদেশ

‘শহীদের স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে বধ্যভূমি সংরক্ষণ জরুরি’

Icon

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:৩৫

‘শহীদের স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে বধ্যভূমি সংরক্ষণ জরুরি’

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান’ আখ্যা দিয়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে তাদের স্মৃতি তুলে ধরতে বধ্যভূমি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) পাহাড়তলী বধ্যভূমিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মেয়র বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তানদের অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল।

তাদের মধ্যে ছিলেন দেশের বুদ্ধিজীবীরা, যারা ছিলেন দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক মেরুদণ্ড। শহীদুল্লাহ কায়সার, জহির রায়হান, ডা. আব্দুল আলিম, গোবিন্দচন্দ্র দেবসহ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল জাতিকে মেধাশূন্য করতে। তাদের আত্মত্যাগে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার মূল মন্ত্র ন্যায্যতা, সাম্যতা, মানবাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় সেদিন পরিপূর্ণভাবে অর্জিত হবে, যেদিন মানুষ তাদের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবে।’

মেয়র বলেন, ‘এই লক্ষ্যে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০০১ সালের পর থেকে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এখনো মানুষ দেখেনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপি, ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন, ২০১৮ সালের রাতে ভোটগণনা এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তাকিয়ে আছে ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের দিকে। গত ১৬-১৮ বছর নির্বাচনের নামে তামাশা দেখেছে জনগণ। মানুষ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। সবাই মিলে উৎসবমুখর পরিবেশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’— এই গণতান্ত্রিক চর্চাকে আবার সমুন্নত করতে হবে। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশে আবার গণতন্ত্র সূচিত হবে।’

চট্টগ্রামের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘আমাদের এখানে নগর সরকার বা সিটি গভর্নমেন্ট নেই। চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের কোনো শহরে সিটি গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যার কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণভাবে সিটি মেয়রের অধীনে নেই। তারপরও আমরা সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছি। পুলিশ কমিশনারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলতে চাই, যেকোনো ব্যাপারে চসিক সার্বিক সহযোগিতা দিতে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।’

তিনি আধুনিক সিটি হিসেবে লন্ডন ও কানাডার উদাহরণ টেনে বলেন, ‘সেখানে সিটি গভর্নমেন্ট আছে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মেয়রের অধীনে। আমাদের নগর সরকার যতক্ষণ প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ একটি পরিকল্পিত, নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও স্বাস্থ্যসম্মত শহর গড়া কঠিন। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব। জলাবদ্ধতা যেমন সমন্বয়ে ৬০ শতাংশ কমানো গেছে, তেমনি সমন্বয়ের মাধ্যমে শহরকে নিরাপদ রাখা অসম্ভব নয়।’

অরক্ষিত বধ্যভূমি প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘চসিকের পক্ষ থেকে যেসব বধ্যভূমি এখনো অরক্ষিত অবস্থায় আছে, সেগুলো সুরক্ষিত করব। এজন্য রাষ্ট্রীয় বাজেট খুবই দরকার। আমরা সামনের নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছি। গণতান্ত্রিক সরকার না এলে বাজেট সংকট থাকে এবং বাইরে থেকে বিনিয়োগও আসে না।’

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে শহরকে সুন্দর করতে অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছি। বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর, বায়োগ্যাস ও গ্রিন ডিজেল তৈরির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন কিংবা সৌরশক্তি প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব শহর গড়ার অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। অনেক ডিপিপি তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া আছে। সামনে যদি গণতান্ত্রিক সরকার আসে, তবে চট্টগ্রামবাসীর আকাঙ্ক্ষিত কাজগুলো চসিকের মাধ্যমে তারা পাবে।’

এসময় মেয়রের সাথে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিনসহ বিভাগীয় ও শাখা প্রধানবৃন্দ এবং সর্বস্তরের জনগণ।

এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর