জেলায় জেলায় লাল-সবুজের পতাকা, উড়ছে বিজয়ের নিশান
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪৫
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে এবং মুক্তিযুদ্ধের শোককে শক্তিতে পরিণত করে নীলফামারীতে শুরু হয়েছে বিজয়ের উল্লাস।
বিজয় দিবসকে ঘিরে জেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য কামনা ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনায় সকল মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপশনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা। এছাড়া জেলা শহরের প্রধান সড়ক, সড়কদ্বীপ এবং বিভিন্ন স্থাপনায় জাতীয় পতাকা ও রঙিন নিশান দ্বারা সজ্জা করা হয়েছে।
১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার সঙ্গে জন্ম নেয় লাল-সবুজ জাতীয় পতাকা। প্রতি বছর বাঙালীর জাতীয় জীবনে এটি বিশেষ দিন হিসেবে উদযাপিত হয়। এই দিনটিকে ঘিরে জাতীয় পতাকা হয়ে ওঠে ঐক্যের প্রতীক এবং আবেগের বহিঃপ্রকাশ। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি সব ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জা করা হয়। চারিদিকে লাল-সবুজের পতাকা উড়ছে এবং ফেরিওয়ালাদের পথচলায় ছড়িয়ে পড়েছে বিজয়ের উচ্ছ্বাস।
নীলফামারী জেলা শহরে কুমিল্লা থেকে আসা ফেরিওয়ালা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাবার হাত ধরে এই ব্যবসা শুরু করেছি। বাবার মুখে শুনেছি মহান মুক্তিযুদ্ধের গল্প। শহীদদের আত্মত্যাগ ও মা-বোনদের সাহসের বিনিময়ে অর্জিত এই ভূখণ্ডের স্বাধীনতা আমাদের লাল-সবুজ পতাকা দ্বারা প্রকাশিত হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই পতাকা স্বাধীনতার প্রতীক। তাই অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি বিক্রিতে আনন্দ পাই। ডিসেম্বর এলে বাঙালীর মনে প্রাণে জেগে ওঠে দেশাত্মবোধ।’
দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে পাওয়া স্বাধীনতার প্রতীক জাতীয় পতাকা আমাদের শেখায় অধিকারের কথা, যোগায় সাহস এবং পরিচিত করেছে আমাদের জাতিকে বিশ্বের দরবারে। শহরের পথ-ঘাট, ফেরিওয়ালাদের কাঁধে নানা আকারের পতাকা আর ছোটরা হাতে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন করছে।
জেলার সৈয়দপুর মুন্সিপাড়া থেকে আসা ফেরিওয়ালা আব্দুল রহিম জানান, ‘২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় দিবসগুলোতে রংপুর বিভাগের আট জেলায় পতাকা বিক্রি করি। আগাম বাড়ীতে পরিবারের সবাই ছোট-বড় সব সাইজের পতাকা তৈরি করি। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে এ ব্যবসা থেকে আমরা সংসার চালাই এবং জেলা ভ্রমণের আনন্দও পাই।’
দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, পতাকার চাহিদা ততই বেড়ে যাচ্ছে।
তৈয়ব আলী সরকার/এনএ

