কুমিল্লায় দুই শিক্ষকের মারামারি : একজন সাসপেন্ড, অপরজনকে শোকজ
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:৫৮
ছবি : সংগৃহীত
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মালাপাড়া ইউনিয়নের চান্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই সহকারী শিক্ষকের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর এটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ৮ ডিসেম্বর দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটলেও, ভিডিওটি শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফেসবুলে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন শিক্ষক অপর শিক্ষককে চেয়ারের সাথে চেপে ধরে আছেন। এ সময় একজন নারী শিক্ষককে আতঙ্কিত অবস্থায় বলতে শোনা যায়, ‘আল্লাহ রহম করো... মারামারি করন লাগে দুজনে, কাইজ্জা করন লাগে?’
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ ও সহকারী শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনের মধ্যে বিভিন্ন সময় নানা বিষয়ে বাকবিতণ্ডা হতো। ঘটনার দিন অফিস কক্ষে তাদের বাগবিতণ্ডা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। উত্তেজনাবশত মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ অফিসে থাকা একটি বঁটি (ধারালো অস্ত্র) নিয়ে মহিউদ্দিনের উপর হামলা চেষ্টা করলে, সহকারী শিক্ষিকা ঝর্না আক্তার সেটি কেড়ে নেন। এর পরও দুই শিক্ষকের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলতে থাকে এবং এক পর্যায়ে জুনায়েদ মহিউদ্দিনকে চেয়ারে ফেলে গলা চেপে ধরেন।
এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসান জুনায়েদ বলেন, ‘ভিডিওতে যা দেখা যাচ্ছে, তা ঘটনার শেষাংশ। প্রথমে তিনি আমাকে ধাক্কা দেন ও শার্টের কলার ধরেন। আমি আত্মরক্ষার্থে তাকে ধরে রাখি। বঁটি দিয়ে আঘাতের চেষ্টার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
অন্যদিকে, মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘জুনায়েদ সাহেব ক্ষমতা দেখাতে চান। এর আগেও একবার তিনি আমাকে হাতুড়ি দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন। সেদিন তিনি হুমকি দিতে থাকায় আমি প্রতিবাদ করি, তখনই তিনি আমার ওপর চড়াও হন এবং পরে বঁটি নিয়ে আসেন। ঝর্না ম্যাডাম সেটি কেড়ে নিলেও তিনি আমাকে চেয়ারে ফেলে গলা চেপে ধরেন।’
প্রত্যক্ষদর্শী সহকারী শিক্ষিকা ঝর্না আক্তার জানান, বাকবিতণ্ডা থেকে শুরু হয়ে ঘটনা হাতাহাতিতে রূপ নেয় এবং জুনায়েদ সাহেব বঁটি হাতে নিলে তিনি সেটি কেড়ে নেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাইলী আক্তার বলেন, ‘ঘটনার বিষয়টি আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েছি। সহকারী শিক্ষা অফিসার পরিদর্শন করে তথ্য নিয়ে গেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা পারভীন বলেন, ‘ঘটনা জানামাত্র সহকারী শিক্ষা অফিসারকে বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। রিপোর্ট তৈরি করে জেলায় পাঠানো হয়েছে।’
কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার পাল সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘মাহমুদুল হাসান জুনায়েদকে বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে এবং মো. মহিউদ্দিনকে শোকজ করা হয়েছে।’
এআরএস

