সাতক্ষীরায় উন্নয়ন কাজে চাঁদাবাজি, পুলিশ পাহারায় কাজ শেষ করলেন ঠিকাদার
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:৫৫
ছবি : বাংলাদেশের খবর
উন্নয়ন কাজে নানা অজুহাতে চাঁদা দাবি, ঠিকাদার ও বাস্তবায়নকারীদের হুমকি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে 'মালামাল' দেওয়ার নামে টাকা আদায়ের কারণে সাতক্ষীরায় উন্নয়ন কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা পরিচয় দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঠিকাদাররা দাবি করছেন, জেলার প্রায় সব উপজেলায় কাজ করতে গেলেই নীরব চাঁদাবাজির শিকার হতে হয়। ফলে জেলার উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ইতিমধ্যে চাঁদাবাজির কারণে পুলিশ পাহারায় কাজ বাস্তবায়নের ঘটনাও ঘটেছে।
ঠিকাদাররা জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বদ্দিপুর কলনী এলাকায় সড়ক নির্মাণ কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান 'মেসার্স ছয়ানী এন্টারপ্রাইজ' এর মালিক জাহিদ হাসানকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
ওই ঘটনার পর বুধবার সকালে পুলিশ পাহারায় পুরাতন সাতক্ষীরা সওজ থেকে গোবিন্দপুর বাজার হয়ে জেয়ালা সড়কের কার্পেটিং কাজ করতে বাধ্য হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
ঠিকাদারের আবেদনের প্রেক্ষিতে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশে ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় পুলিশ পাহারায় কাজ শেষ করে তারা। এই কাজের প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল এক কোটি ১২ লাখ আট হাজার ছয়শত ৯৩ টাকা।
এ বিষয়ে ঠিকাদার জাহিদ হাসান বলেন, ‘আমরা সরকারের উন্নয়ন কাজের অংশীদার। আমাদের কাজে বাধা দেওয়া মানে দেশকে পিছিয়ে দেওয়া। বর্তমানে সাতক্ষীরার বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে গেলে নীরব চাঁদাবাজির শিকার হতে হয়। আমার কাছ থেকে টাকা চেয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় তারা রাস্তা খুঁড়ে দেয়। অল্প কিছু কাজ বাকি থাকতে আমাকে চরমভাবে হেনস্তা করা হয়। পরে পুলিশ পাহারায় কাজটি শেষ করা হয়েছে।’
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে জানতে পারি বদ্দিপুরে সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি। পরে আমার একজন উপ-পরিদর্শক ও দুইজন কনস্টেবল পাঠিয়ে কাজ শেষ করার ব্যবস্থা করি।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রকৌশলী ইয়াকুব আলী জানান, ‘কার্পেটিং চলাকালে স্থানীয় কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক ঠিকাদারের কাছে বড় অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক চাঁদার টাকা না দিলে তারা নির্মিত সড়কটি শাবল দিয়ে খুঁড়ে দেয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে তারা অফিস ও ঠিকাদারের লোকজনকে নানা হুমকি দেয়। পরে তাদের আক্রমণাত্মক অবস্থা দেখে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ সদস্যদের পাহারায় কাজটি শেষ করা হয়।’
আব্দুস সামাদ/এআরএস

