Logo

সারাদেশ

গড়াই নদীর ভাঙনে আতঙ্কে কুমারখালী, নদীগর্ভে বিলীন ফসলি জমি

Icon

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২০

গড়াই নদীর ভাঙনে আতঙ্কে কুমারখালী, নদীগর্ভে বিলীন ফসলি জমি

কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌর এলাকার তেবাড়িয়া থেকে আগ্রাকুণ্ডা পর্যন্ত গড়াই নদীর তীরে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে নদীগর্ভে চলে গেছে অন্তত ৩০ বিঘা ফসলি জমি। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের কয়েকশ পরিবার।

নদী ভাঙনের মুখে পড়া তেবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মদিনা খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকায় বসবাস করলেও এমন ভাঙন আগে দেখেননি। নদীর পানি কমলেও হঠাৎ হঠাৎ পাড় ভেঙে পড়ছে। কখন যে বসতভিটা নদীতে চলে যায়, সেই দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর গড়াই নদীর মাঝখানে বড় চর জেগেছে। ফলে নদীর মূল স্রোত পাড়ের দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তেবাড়িয়া থেকে আগ্রাকুণ্ডা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। ওই এলাকায় কোনো স্থায়ী বাঁধ না থাকায় ঝুঁকি আরও বেড়েছে।

ভাঙন কবলিত এলাকায় সরিষা, ভূট্টা, তিল, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়েছিল। এরই মধ্যে বড় একটি অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরও অন্তত ৫০ বিঘা জমি এবং প্রায় ৩০০ পরিবারের ঘরবাড়ি হুমকিতে পড়বে।

আগ্রাকুণ্ডা গ্রামের কৃষক ছেইমান শেখ বলেন, ‘বহু বছর পর এমন ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফসল হারানোর পাশাপাশি এখন বসতভিটা নিয়েও চরম উদ্বেগে আছেন তারা। সরকারি লোকজন এলাকা ঘুরে গেলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা চোখে পড়েনি।’

তেবাড়িয়া গ্রামের চা বিক্রেতা সমীর চাকি বলেন, ‘নদীর পানি কমলেও ভাঙন হচ্ছে, আবার বাড়লেও ভাঙন হচ্ছে। নদীর এই আচরণ সাধারণ মানুষের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। পাকা বাঁধ নির্মাণই একমাত্র স্থায়ী সমাধান বলে মনে করেন তিনি।’

এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তেবাড়িয়া শেরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মোশাররফ হোসেন জানান, ‘নদীর পাড়ে আবাদ করা জমির খুব কাছাকাছি চলে এসেছে ভাঙন। দ্রুত বাঁধ না হলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’

খবর পেয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনের কথা জানিয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘আপাতত ভাঙন রোধে কোনো বরাদ্দ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আখতার বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’

উজ্জ্বল মাহমুদ/এনএ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

নদী ভাঙন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর