এনসিপি নেতাকে গুলি করা হয় ‘নারী সঙ্গী তন্বী’র বাসায়
বিপুল পরিমাণ মাদক ও অনৈতিক কাজের আলামত উদ্ধার
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:২৯
ছবি : সংগৃহীত
খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র শ্রমিক সংগঠন ‘জাতীয় শ্রমিক শক্তি’র বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদারকে (৪২) তার নারী সঙ্গীর বাসায় গুলি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সোনাডাঙ্গা এলাকার ওই বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক ও অনৈতিক কাজের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে মোতালেবের ওই ‘নারী সঙ্গী তন্বী’ পলাতক রয়েছেন। তাকে খুঁজে বের করতে পুলিশের অভিযান চলছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সোনাডাঙ্গার আল-আকসা মসজিদ রোডের ১০৯ নম্বর ‘মুক্তা হাউস’-এর নিচতলায় এই গুলির ঘটনা ঘটে।
আহত মোতালেব শিকদার শুরুতে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, রাস্তায় মোটরসাইকেল আরোহীরা তাকে গুলি করেছে। তবে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে যে, ঘটনাটি ঘটেছে তার নারী সঙ্গী তন্বীর ফ্ল্যাটের ভেতরে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আগের রাতে মোতালেব আরও দুজনসহ ওই বাসায় প্রবেশ করেছিলেন।
কেএমপির উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্তে জানা গেছে, তন্বী নামের ওই নারীর সাথে মোতালেব গত এক মাস ধরে সেখানে বসবাস করছিলেন। আমরা ওই বাসা থেকে পাঁচটি বিদেশি মদের খালি বোতল, পিস্তলের গুলির খোসা এবং ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করেছি। অসামাজিক কার্যকলাপ ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
বাড়ির মালিকের স্ত্রী আশরাফুন্নাহার জানান, এক মাস আগে তন্বী নামের এক তরুণী নিজেকে এনজিও কর্মী পরিচয় দিয়ে এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেন। তবে তন্বীর রুমে প্রায়ই একাধিক পুরুষের আসা-যাওয়া ছিল। অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়ির মালিক চলতি মাসে তাকে বাসা ছেড়ে দেওয়ার নোটিশও দিয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, এনসিপি নেতা মোতালেব খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর অনুসারী সৌরভ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন। পূর্ব থেকে চলে আসা এই চাঁদাবাজির অর্থের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে অন্তর্কোন্দল থেকেই তাকে গুলি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ এই ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পায়নি। ঘটনার পর থেকেই তন্বী নিখোঁজ রয়েছেন।
গুলিটি মোতালেবের বাম কানের চামড়া স্পর্শ করে বেরিয়ে যাওয়ায় তিনি অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত এবং সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি জানান, ওই নারী সঙ্গীকে খুঁজে বের করতে পুলিশের অভিযান চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হামলার মূল কারণ ও জড়িতদের নাম বেরিয়ে আসবে।

