বোয়ালমারীতে ভেজাল খেজুর গুড়ে বাজার সয়লাব
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:৪১
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ব্যাপক হারে ভেজাল খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে। চিনি ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে এসব গুড় তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এতে ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে।
জানা যায়, বেশি মুনাফা ও শীত মৌসুমে চাহিদার সুযোগ নিয়ে উৎপাদকরা চিনির সঙ্গে রং, হাইড্রোজ, সোডা, ফিটকারির মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন। এসব গুড় কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে খাঁটি খেজুর রস বা ঝোলা গুড় দিয়ে তৈরি গুড়ের দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। খাঁটি গুড়ের দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা হওয়ায় তা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
উপজেলার বেশিরভাগ হাট-বাজারে নিম্নমানের ঝোলা গুড়ে চিনি ও রাসায়নিক মিশিয়ে গুড় তৈরি করে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে কিছু ক্রেতা গাছিদের কাছ থেকে খাঁটি গুড় সংগ্রহ করছেন, যা স্বাদ ও গুণে উত্তম হলেও দাম বেশি।
গুড় উৎপাদনকারীরা জানান, খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় রসের সংকট রয়েছে। ৮ থেকে ১০ লিটার রসে এক কেজি গুড় তৈরি হয়, যার উৎপাদন খরচ ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। কিন্তু চিনি মেশালে পরিমাণ বাড়ে ও দাম কম রাখা যায়। খাঁটি গুড় কালো রংয়ের হয় এবং স্বাদ অটুট থাকে, কিন্তু চিনি মেশানো গুড়ের রং ফর্সা ও স্বাদ-গন্ধ কম থাকে।
বোয়ালমারী বাজারের গুড় ব্যবসায়ী মানিক রায় বলেন, ‘আমাদের দোকানে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা দামের গুড় আছে। আমরা নিজেরা তৈরি করি না, তাই উপাদান সম্পর্কে নিশ্চিত নই।’
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ডিসিপ্লিন) ডা. মো. খালেদুর রহমান বলেন, ‘খেজুর গুড়ে ভেজাল মিশ্রণ করলে খাদ্যনালিতে ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের ক্ষতি হতে পারে।’
বোয়ালমারী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিব্বির আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা আছে। বিএসটিআইয়ের টিম নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গুড় পরীক্ষা করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিএসটিআই পরীক্ষায় কিছু সময় লাগতে পারে।’
এমএম জামান/এআরএস

