ছবি : সংগৃহীত
শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নওগাঁ জেলায় শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে নওগাঁ সদর হাসপাতালের শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগীর চাপ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কনকনে ঠান্ডার কারণে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন শিশু ও বয়স্করা। বর্তমানে সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন শিশু চিকিৎসাধীন থাকছে, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ জনের মধ্যে। একইভাবে মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ থেকে ১০০ জনে।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের নার্স জান্নাতুল আক্তার জানান, ২৫০ শয্যার নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে অতিরিক্ত ঠান্ডাজনিত কারণে বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে ৩৭ জন শিশু ভর্তি রয়েছেন। শীতের প্রভাবে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের অভিভাবকদের মধ্যেও উৎকণ্ঠা দেখা গেছে। রোগীর মা জেসমিন বলেন, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে তার সন্তানের জ্বর, সর্দি, বমি ও ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর চিকিৎসা শুরু হয়েছে। অপর এক রোগীর মা সুলতানা পারভীন জানান, ঠান্ডাজনিত জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তার সন্তান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তবে চিকিৎসায় উন্নতি হওয়ায় শিগগিরই ছাড়পত্র পাওয়ার আশা করছেন।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (নিউরো সার্জারি) ডা. মো. আবু আনছার আলী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নওগাঁয় ঠান্ডার প্রকোপ তুলনামূলক বেশি হওয়ায় শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া—যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এআরআই বলা হয়—এর প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি বয়স্কদের মধ্যে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও বাড়ছে।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে হাসপাতালের বিদ্যমান জনবল ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তবে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়লে বাড়তি চাপ তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, শীতের এই সময়ে শিশু ও বয়স্কদের উষ্ণ পোশাক পরানো, বিশুদ্ধ পানি পান নিশ্চিত করা এবং কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
এম এ রাজ্জাক/এআরএস

