শেরপুরে পৃথক স্থানে খড়ের পালায় আগুন, পুড়ে ছাই ৩৭ বিঘা জমির খড়
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২৯
বগুড়ার শেরপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে পৃথক দুটি স্থানে কৃষকের খড়ের পালায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার মির্জাপুর ও খামারকান্দি ইউনিয়নের জয়নগর এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে দুই কৃষকের প্রায় ৩৭ বিঘা জমির খড় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকারও বেশি।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মাঠপাড়া রানীরহাট মোড় এলাকার আমির হোসেনের ছেলে মাকেজ আলী। ভুক্তভোগী কৃষক মাকেজ আলী বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর ৫টার দিকে প্রতিবেশীদের চিৎকার শুনে জেগে উঠে দেখেন, তার ১২ বিঘা জমির খড়ের পালায় দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। ৫টি গরুর খাবারের একমাত্র অবলম্বন ছিল এই খড় মুহূর্তেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রাতের কোনো এক সময় আগুন লাগিয়েছে সকালে হতে হতে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমরা এনজিও থেকে কিস্তির টাকা তুলে গরু ও খড় কিনেছিলাম। এখন খড়গুলো পুড়ে গেল, আমরা গরু পালব কী করে আর কিস্তিই বা দেব কীভাবে? আমরা একদম দিশেহারা হয়ে পড়েছি। এই ঘটনায় তাদের প্রায় ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।’
অন্যদিকে, একই রাত ৮টার দিকে জয়নগর নতুন পাড়া এলাকায় রফিকুল ইসলাম নামে এক কৃষকের খড়ের পালায় আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, পূর্ব শত্রুতার জেরে কে বা কারা তার বাসায় রাখা ২৫ বিঘা জমির খড়ের পালায় আগুন দিয়েছে। এতে তার প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কৃষক মানুষ, এই দেড় লক্ষ টাকা ক্ষতি মানে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া। অনেক কষ্ট করে এই খড় সংগ্রহ করেছিলাম, এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’
একই রাতে দুটি পৃথক স্থানে আগুনের ঘটনায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী উভয় পক্ষই দাবি করেছেন, শত্রুতা করেই কেউ পরিকল্পিতভাবে এই আগুন লাগিয়েছে। স্থানীয়রা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শেরপুর ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, জয়নগর এলাকার আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে মির্জাপুর এলাকার কোনো খবর পায়নি।
মো. আব্দুল ওয়াদুদ/এনএ

