শেবাচিমে চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৪২
বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগে মুক্তিযুদ্ধের বীর প্রতীক অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট রত্তন আলী শরিফ (৮২) মৃত্যুবরণ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তার স্বজনরা। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে শেবাচিম হাসপাতালের পঞ্চম তলার ৫০০৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে শনিবার বিকেলে অসুস্থ অবস্থায় তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
বীর প্রতীক রত্তন আলী শরিফ বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন।
মৃতের মেয়ে তানজিলা আক্তার ইমু অভিযোগ করে বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আমার বাবার ডায়াবেটিস ও প্রেসার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শনিবার বিকেলে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করার পর একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরদিন রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একজন চিকিৎসক কেবিনে আসেন। এরপর দুপুরের দিকে বাবার অক্সিজেন লেভেল হঠাৎ কমে যায় এবং ডায়াবেটিস বেড়ে গিয়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ অবস্থায় কয়েকবার কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকার জন্য কেবিনে গেলে তারা আসতে অনীহা প্রকাশ করেন। বরং রোগীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে কিংবা প্রাইভেট ক্লিনিকে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। বাবার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে আবার চিকিৎসককে ডাকা হয়, তখনও কেউ আসেননি। পরে আমার এক বোন সিনিয়র সচিবকে ফোনে বিষয়টি জানালে চিকিৎসক কেবিনে আসেন। কিন্তু তখন গিয়ে দেখা যায়, আমার বাবা আর বেঁচে নেই।’
মৃতের ছেলে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন। অথচ সেই মানুষটি বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার সরকারের কাছে দাবি করছি।’
ঘটনার পরপরই শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মাহাবুবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে হাসপাতাল পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, ‘রোগীটি আমার তত্ত্বাবধানে কেবিনে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগটি তদন্তাধীন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই প্রকৃত কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।’
গাজী আরিফুর রহমান/এনএ

