সীতাকুণ্ডে গরুর খামারে সশস্ত্র ডাকাতি, ১২টি গরু লুট
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:০৭
ছবি : বাংলাদেশের খবর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি গরুর খামারে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ১৮ থেকে ২০ জনের একটি ডাকাত দল রাতে খামার থেকে ১২টি গরু লুট করে নিয়ে যায়। একটি গরু দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ায় রক্ষা পায়। ঘটনাটি সীতাকুণ্ডের মধ্যম বাঁশবাড়িয়া এলাকায় ঘটেছে।
ভুক্তভোগী খামার মালিক ইসমাইল জানান, সোমবার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন ‘এনআই ডেইরি ফার্মে’ ডাকাত দল হানা দেয়। তারা টিনের বেড়া কেটে খামারে প্রবেশ করে প্রথমে তার কক্ষে ঢুকে অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে। পরে তার হাত-পা বেঁধে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং চিৎকার করলে জবাই করার হুমকি দেয়।
এ সময় ডাকাত দলের অন্য সদস্যরা খামারের গরুগুলোর রশি কেটে একটি ট্রাকে তোলে। একটি গরু দৌড়ে দূরে চলে যাওয়ায় তারা তা নিতে পারেনি।
পাশের একটি চায়ের দোকানের দোকানদার আওয়াজ পেয়ে বাইরে এলে তাকেও ধরে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে পাশের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। তিনি কোনোমতে পুকুরের অন্য পাড় উঠে প্রাণে বেঁচে যান।
ডাকাত দল ট্রাকভর্তি গরু নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ভুক্তভোগীরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বিভিন্ন সড়কে তল্লাশি চালানো হলেও ডাকাতদের ধরা যায়নি।
খামারের অন্য মালিক নজরুল ইসলাম জানান, জমি বিক্রি ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে তারা এই খামার গড়ে তুলেছিলেন। ডাকাতি হওয়া ১২টি গরুর মধ্যে ৫টি উন্নত জাতের গাভী ছিল, যেগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লিটার দুধ পাওয়া যেত। সেই দুধ বিক্রি করেই সংসার ও গরুর খাবার চলত। ডাকাতিতে প্রায় ২২ থেকে ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন ব্যাংক ঋণ শোধ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড মডেল থানায় ১৮ থেকে ২০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ গরু উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি (তদন্ত) মো. আলমগীর জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মহাসড়ক ও আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছে। গরু উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, চলতি ডিসেম্বর মাসের ১৯ তারিখে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকা থেকে একটি ডাকাত দল ২৮টি গরুসহ একটি ট্রাক ছিনতাই করেছিল। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় সব গরু উদ্ধার করা হয়। পরপর এমন ডাকাতির ঘটনায় সীতাকুণ্ডের গরুর খামারিরা আতঙ্কিত।
মোহাম্মদ জামশেদ আলম/এআরএস

