Logo

সারাদেশ

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে চাঁদপুরে ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁদপুর

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:৩৬

পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে চাঁদপুরে ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানায় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে অজ্ঞাতনামা চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগী ও ডাকাতি মামলার আসামি মো. খোকন (৩৯)। গত ২৭ ডিসেম্বর ফরিদগঞ্জ থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।

এর আগে গত ২৮ নভেম্বর এক ডাকাতি মামলায় আসামির দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার সময় পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাতুল হাসান আল মুরাদ নির্যাতনের বিষয়ে মামলা করার নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ফখরুদ্দিন আহমেদ সপন।

মামলার কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন ফরিদগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট একটি ডাকাতি মামলায় (জিআর নং-৩১৫/২৫) গত ১৬ ডিসেম্বর তিনজন অজ্ঞাতনামা আসামিকে হাজির করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের আবেদনের প্রেক্ষিতে এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখিত খোকনের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের সময় আসামি পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

আসামির গ্রেপ্তারের সময় গ্রেপ্তারি স্মারকে আসামির সুস্থতা ও পুলিশ ফরওয়ার্ডিংয়ে কোনো জখমের উল্লেখ না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আসামিকে পরীক্ষা করে নির্যাতনের অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে লিপিবদ্ধ করেন। একই সঙ্গে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারকে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরপর ১৭ ডিসেম্বর চাঁদপুর সদর হাসপাতাল থেকে আসামিকে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেন চিকিৎসক রানা সাহা ও আসিবুল হাসান চৌধুরী। হাসপাতালের মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা যায়, আসামির উভয় পায়ের উরুর ওপর একাধিক নীল-কালশিটে দাগ রয়েছে। চিকিৎসা সনদে উল্লেখ করা হয়, আসামির বর্ণনা অনুযায়ী এ জখম প্রায় চার দিন আগের।

আদালতের মামলা দায়েরের নির্দেশের পর গত ২৩ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) মুকুর চাকমা ঘটনার গুরুত্ব ও স্পর্শকাতরতার কথা উল্লেখ করে ১৫ দিনের তদন্তের সময় চান। তবে ম্যাজিস্ট্রেট সময় বাড়ানো বিবেচনা না করে আগের আদেশ বহাল রাখেন।

আদালতের আদেশ পর্যালোচনায় দেখা যায়, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য। ফলে আইনানুযায়ী এ ধরনের অপরাধে মামলা দায়ের ব্যতীত তদন্ত পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই।

২৭ ডিসেম্বর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ ইফতেখারকে।

মামলার বাদী মো. খোকন ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি সরদারবাড়ির শাহজাহানের ছেলে। বিভিন্ন অপরাধে ফরিদগঞ্জ থানায় তার চারটি মামলা রয়েছে। সর্বশেষ গত ২৮ নভেম্বর ডাকাতির ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা সাত জনকে আসামি করে মামলা করেন উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের সাইসাঙ্গা গ্রামের মিজিবাড়ির রহিম বাদশার স্ত্রী পেয়ারা বেগম। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন আসামি খোকন।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. রবিউল হাসান বলেন, `আদালতের আদেশের পর ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।'

আলআমিন ভূঁইয়া/এআরএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

মামলা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর