ভোলায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার মুজিব কীল্লা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২৭
ছবি : বাংলাদেশের খবর
প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষ ও গবাদিপশু রক্ষার জন্য ভোলার লালমোহন উপজেলার তেতুলিয়া নদীর গর্ভে অবস্থিত বিচ্ছিন্ন চর শাহাজালালে ২ কোটি ৫০ লক্ষ ৬২ হাজার ৯৩০ টাকা ব্যয়ে দুর্যোগ আশ্রয়ণ কেন্দ্র কাম মুজিব কীল্লা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটির সময়সীমা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তড়িঘড়ি করে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে এবং রাতের আধারে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের চর শাহাজালালে নির্মাণাধীন এই কেন্দ্রে মেয়াদোত্তীর্ণ সিমেন্ট, নিম্নমানের খোয়া, রড এবং লাল বালির সঙ্গে স্থানীয় বালি মিশিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বলা হয়েছিল, দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে ভবনটি সামাজিক অনুষ্ঠান ও কমিউনিটি উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে এবং সামনের খোলা জায়গা খেলাধুলার কাজে লাগবে। তবে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর কারণে আশ্রয়ণ কেন্দ্রটি দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষের জীবনরক্ষার বদলে বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে স্থানীয়রা শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
চর শাহাজালালের বাসিন্দা মো. সবুজ বলেন, ‘জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় গবাদিপশু ও মানুষের জীবন বাঁচাতে এই আশ্রয়ণ নির্মাণ হলেও, নিম্নমানের কাজের কারণে এটি মরণফাঁদে পরিণত হতে পারে। বেশিরভাগ কাজ রাতের আঁধারে করা হয়েছে।’
অন্য বাসিন্দা মো. মাকছুদ বলেন, ‘বালি দিয়ে ভরাট করে ভবন তৈরি করায় বন্যায় বা জোয়ারের পানিতে বালি সরে গিয়ে পুরো কাঠামো ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের এক বাসিন্দা নাজিম বলেন, ‘এই প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে, কিন্তু তদারকির অভাবে ঠিকাদার ইচ্ছেমতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো প্রকল্পই প্রশ্নবিদ্ধ।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঈদ্রিস আলী কনস্ট্রাকশনের বাস্তবায়নকারী ফজলুল কবিরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহ আজিজ বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভোলা জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আজিম উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি জানামাত্র দ্রুত সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এআরএস

