সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান ও বিএনপি নেতা মজিদের সম্পদ অনুসন্ধানে নতুন মোড়
মামলার প্রস্তুতি

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৪০

ছবি : সংগৃহীত
সাবেক ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি সভাপতি আবদুল মজিদের যৌথ ব্যবসায়িক সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জমি, ফ্ল্যাট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুদক সূত্রে জানা যায়, তদন্তে প্রাথমিকভাবে আছাদুজ্জামান মিয়া ও তার পরিবারের নামে ঘোষিত সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২৩ কোটি টাকা হলেও বাস্তবে তা ২০০ কোটির বেশি। আয়কর নথিতে বিপুল সম্পদ গোপনেরও অভিযোগ উঠেছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান প্রায় শেষ। শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
তদন্তে উঠে এসেছে, আছাদুজ্জামান ও বিএনপি নেতা আবদুল মজিদ পূর্বাচল, উত্তরা, শ্যামলী, খিলক্ষেত ও মিরপুরে একাধিক সম্পত্তিতে যৌথ বিনিয়োগ করেছেন। পূর্বাচলের ১৪ নম্বর সেক্টরের একটি প্লট, উত্তরার কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও বার, এবং খিলক্ষেত ও মিরপুরের ফ্ল্যাটগুলো তাদের যৌথ নামে নিবন্ধিত রয়েছে বলে দুদক দাবি করছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, এসব সম্পত্তির একটি অংশের অর্থায়ন হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে দুদক।
তদন্তে আরও জানা যায়, আছাদুজ্জামানের স্ত্রী আফরোজা জামান একজন গৃহিণী হলেও ২০২৩–২৪ করবর্ষে ৮ কোটির বেশি টাকার সম্পদের মালিকানা ঘোষণা করেছেন। তার মালিকানাধীন ‘মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে, যা আয়কর ফাইলে উল্লেখ করা হয়নি। সন্তানদের নামেও জমি, ফ্ল্যাট ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য দুদকের হাতে এসেছে।
উল্লেখ্য, আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডিএমপি কমিশনার ছিলেন। বিরোধী দলের আন্দোলন দমনে তার কঠোর ভূমিকায় রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমানে তিনি উত্তরা ও খিলগাঁও থানার দুটি হত্যা মামলায় কারাগারে আছেন। অন্যদিকে ঝিনাইদহ বিএনপি নেতা আবদুল মজিদ স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং ব্যবসায়িক কারণে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
দুদক সূত্র জানায়, পর্যাপ্ত প্রাথমিক প্রমাণ মেলার পর মামলা রুজুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে আছাদুজ্জামান, তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের ট্যাক্স ফাইল, ব্যাংক হিসাব ও জমির নথি তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি আবদুল মজিদের প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এসআইবি/এমএইচএস