শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন হত্যা : ২ শুটারসহ গ্রেপ্তার ৫
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪১
প্রতীকী ছবি
রাজধানীর পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুন (৫৫) হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই পেশাদার শুটারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোমবার সকাল ১১টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণের সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় মামুনকে। আদালতে হাজিরা শেষে আফতাবনগরের বাসায় ফেরার পথে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে ছয় থেকে সাত রাউন্ড গুলি চালায়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গুলি ছোড়ার সময় মামুন দৌড়ে গলির দিকে পালানোর চেষ্টা করলেও মাস্ক ও ক্যাপ পরিহিত দুই হামলাকারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মামুনকে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী জানান, মামুন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন। তিনি ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ‘ইমন-মামুন গ্রুপ’-এর অন্যতম নেতা ছিলেন। একসময় শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী হিসেবে পরিচিত থাকলেও পরবর্তীতে ক্ষমতাকেন্দ্রিক দ্বন্দ্বের কারণে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
মামুন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলা ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ২০২৩ সালে দীর্ঘ ২০ বছরের বেশি কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। মুক্তির তিন মাসের মাথায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে তার ওপর গুলি চালানো হয়, যেখানে পথচারী ভুবন চন্দ্র শীল নিহত হন। তখন পুলিশ জানিয়েছিল, হামলাকারীরা ‘ইমন গ্রুপ’-এর সদস্য ছিল।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইমন-মামুন বিরোধই এ হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। গ্রেপ্তার শুটারদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পরিকল্পনা, নির্দেশদাতা ও অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, এটি একটি পরিকল্পিত টার্গেট কিলিং, যার পেছনে দীর্ঘদিনের গ্যাং দ্বন্দ্ব কাজ করেছে।
এনএমএম/এমএইচএস

