এফবিসিসিআই প্রশাসকের পদত্যাগসহ ৪ দাবি ব্যবসায়ীদের একাংশের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৫

এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সহায়ক কমিটি বাতিল ও প্রশাসকের পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এফবিসিসিআইয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জুনে নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পেশ করা হবে। এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসকের উচিত ছিল এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি, সহ-সভাপতি, পরিচালক ও স্বনামধন্য ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ে বাজেট কমিটি গঠন করা। অথচ তিনি তা করেননি। আমরা বলব, তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক ও সহায়ক কমিটির স্বেচ্ছাচারিতায় দেখা যায় রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রামে এফবিসিসিআইয়ের মনোনীত সদস্য বাদে কিছু নামধারী ব্যবসায়ী ও সদস্য নয় এমন ব্যক্তিদেরকে পাঠানো হয়, যা ব্যবসায়ীদের জন্য অপমানজনক।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি ৭ থেকে ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন প্রতিনিধি হিসেবে যাদেরকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে- এদের অনেকেই এফবিসিসিআইয়ের সদস্য নয়। আরও দুঃখজনক বিষয় যে, এদের অনেকেরই কোনো ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য নেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এফবিসিসিআইয়ের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী প্রতিনিধি জাতীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। অথচ সহায়ক কমিটির কাছের কিছু সদস্য ও কিছু পরিচিত মুখ বারবার গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে। বিষয়টি প্রশাসকের নজরে আনা ও বারবার বলা সত্ত্বেও এসব লোকদের এফবিসিসিআইয়ে পদচারণা বন্ধ হয়নি। তাই আমাদের দাবি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে সহায়ক কমিটি বাতিল করতে হবে এবং প্রশাসককেও পদত্যাগ করতে হবে।
যদি সেটি না করা হয়- তবে এফবিসিসিআই রক্ষায় বৃহত্তর আকারে মানববন্ধন ও আন্দোলন করার কর্মসূচি দিতে বাধ্য থাকবে এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদ।
দাবিগুলো হলো
১. নির্বাচিত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিকে আমরা এফবিসিসিআই প্রশাসক হিসেবে চাই।
২. নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন ততটুকু সংস্কার করে দ্রুত গতিতে নির্বাচন দিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিতে হবে।
৩. অবিলম্বে সহায়ক কমিটি বাতিল করে প্রকৃত নিরপেক্ষ, সৎ ব্যবসায়ী প্রতিনিধির সমন্বয়ে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। যাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
৪. চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন সকল পদে স্ব স্ব গ্রুপের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি হতে হবে।
সরকার নিযুক্ত প্রশাসক দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে নিলেও ব্যবসায়ীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফেডারেশন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। অন্যদিকে ফেডারেশনের সংস্কার কার্যক্রম চলছে খুবই ধীরগতিতে । সে কারণে নির্বাচন প্রক্রিয়াও শুরু হচ্ছে না। তৃতীয় দফায় প্রশাসকের মেয়াদ আবার বাড়ানো হলে দেশের সাড় ৪ কোটি ব্যবসায়ী তা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না। ফেডারেশনে ব্যবসায়ী নেতৃত্ব না থাকায় বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই। অথচ জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যবসায়ীদের অবদান ৮০-৮১ শতাংশ। তাই নির্বাচন ছাড়া মাসের পর মাস এভাবে চললে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতির মুখ পড়ার শঙ্কা আছে। এ কারণে বলছি, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত ব্যবসায়ী নেতাদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই স্বার্থ সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য সচিব জালালউদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক পরিচালক ও সহ-সভাপতি নিজামউদ্দীন রাজেশ, আবু মোতালেব, খন্দকার রহুল আমিন, শফিকুল ইসলাম ভরসা, আফসারুল আমীন, হাফেজ হারুন, শিউল আলম চৌধুরী, শফিউল আলম মোল্লা প্রমুখ।
এএইচএস/ওএফ