গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধ, শোকজ নোটিশ প্রত্যাহার ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ‘নীট হরাইজন’ গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় এলাকায়।

সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বহেরারচালা এলাকায় শ্রমিকরা কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে বেলা ১০টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত উপজেলার গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এতে মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে মাওনা হাইওয়ে ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কারখানার একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার কারখানার ২৯ জন শ্রমিককে শোকজ করা হয়। এরপর তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের পুনরায় কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে শ্রমিকেরা বাসায় ফিরে যান।

বুধবার সকালে যথারীতি শ্রমিকেরা কর্মস্থলে এসে দেখেন কারখানার মূল ফটকে তালা ঝুলছে। পূর্ব নোটিশ ছাড়া শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটকে তালা দিয়েছেন—এর প্রতিবাদে আন্দোলন করছি।

কারখানার শ্রমিক আছিয়া আক্তার বলেন, বাড়ি থেকে সকালে কারখানায় কাজ করতে এসে দেখি প্রধান ফটক বন্ধ। কারখানার ফটকের সামনে সাদা কাগজে লেখা ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ’—এমন একটি নোটিশ টানিয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সেখানে লেখা রয়েছে- আদেশক্রমে, কারখানা কর্তৃপক্ষ।

শ্রমিক আতিক হাসান বলেন, শ্রমিকরা তাদের অধিকারের কথা জানালেই এটা অন্যায় মনে করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিনরাত পরিশ্রম করি। এরপর মাস শেষে বেতনের অপেক্ষায় থাকি। আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে আমাদের মা-বাবা, স্ত্রী ও অবুঝ সন্তানেরা।

মাসুদ রানা নামে এক শ্রমিক বলেন, মঙ্গলবার কারখানা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে ২৯ জন শ্রমিককে শোকজ করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এরপর থেকে সব শ্রমিক ফুঁসে উঠে কর্মবিরতি পালন করে। সেই ইস্যুতে কারখানা কর্তৃপক্ষ বিনা নোটিশে কারখানা বন্ধের নোটিশ দিয়েছে।

কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, শ্রম আইন ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করা হবে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেলা সোয়া ১১টা থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

সোহেল/এমবি