কিস্তির টাকা পেতে শর্তে অনড় আইএমএফ, সময় চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ১৯:০৭

গ্রাফিক্স : বাংলাদেশের খবর
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কিস্তির টাকা পেতে কঠোর শর্তে অনড় সংস্থাটি, তবে তা মানতে আপাতত রাজি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করার বিষয়ে আরও সময় চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (৫ মে) আইএমএফের সঙ্গে অনুষ্ঠিত অনলাইন সভায় কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই আলোচনার পর্ব শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিবসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ে অগ্রগতি জানতে গত মাসে ঢাকা সফর করেন সংস্থাটির প্রতিনিধিরা। তবে কোনো সমঝোতা ছাড়াই তারা ঢাকা ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে ওয়াশিংটনে বসন্তকালীন অধিবেশনের ফাঁকে সাইডলাইন বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বৈদেশিক ঋণনির্ভর নয়। সবচেয়ে সহজ শর্তে, সবচেয়ে কম সুদে, রাষ্ট্রের জন্য লাভজনক যে ঋণ, সেটাই গ্রহণ করবে বাংলাদেশ।’
তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আইএমএফের সঙ্গে ঋণচুক্তি ভেঙে যাওয়ার মত পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। তাদের মতে, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সময় চাওয়াটা যৌক্তিক।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আইএমএফের শর্তগুলো অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাও অনুসরণ করে। সুতরাং এই ঋণের প্রভাব শুধু অর্থের দিকেই নয়, ভবিষ্যৎ ঋণ প্রাপ্তিতেও এর ছাপ পড়বে।
তিনি আরও বলেন, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার এখনো এক টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আইএমএফের উচিত এই প্রক্রিয়াকে কিছুটা সময় দেওয়া। এখনই গোঁ ধরাটা যুক্তিসঙ্গত নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বাজারভিত্তিক হার চালুর ঝুঁকি সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিশেষ তহবিল গঠনের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারকে এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
আইএমএফের বাকি ৩ কিস্তিতে আরও ২৩৯ কোটি ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে শর্ত পূরণে গতি না বাড়ালে সেই অর্থ ছাড় নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।