এনবিআর বিলুপ্ত, গঠিত হলো রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ১০:১৫

এনবিআর বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করেছে সরকার /ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করেছে সরকার। গত সোমবার (১২ মে) রাতে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর জারিকৃত এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আদেশ, ১৯৭২’ বাতিল করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের প্রশাসনিক রদবদল ঘটলো।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এখন থেকে রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি পৃথক সংস্থা রাজস্ব সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এনবিআরের অধীনে থাকা আয়কর, মূসক (ভ্যাট) ও শুল্ক বিভাগের বিদ্যমান জনবল ও কাঠামো রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্থানান্তরিত হবে। অপরদিকে, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) কর্মকর্তা ও নীতিগত কার্যক্রমের দায়িত্ব যাবে নবগঠিত রাজস্ব নীতি বিভাগে।
রাজস্ব নীতি বিভাগ মূলত করনীতি প্রণয়ন, আইন সংস্কার, আন্তর্জাতিক কর চুক্তি ও বাণিজ্যিক শুল্ক কাঠামো নির্ধারণের মতো কৌশলগত দিকগুলো দেখভাল করবে।
অন্যদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ সরাসরি রাজস্ব আদায়, কর পরিশোধ ও প্রশাসনিক পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে।
এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এনবিআরের অধীনে থাকা আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তারা। তাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই হঠাৎ করে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছে।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে এনবিআর ভবনে সোমবার আয়কর ও কাস্টমস কর্মকর্তারা একযোগে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন। এতে দিনভর রাজস্ব আদায় কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
এনবিআর অফিসার্স ইউনিটি কাউন্সিল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানান, এই প্রশাসনিক পুনর্গঠন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সংস্কার কর্মসূচির অংশ। রাজস্ব আদায়ের দক্ষতা বাড়ানো ও কর-জিডিপি অনুপাত উন্নয়নের লক্ষ্যে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।
তবে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, এনবিআর ভেঙে দুটি পৃথক বিভাগ করার চেয়ে বিদ্যমান কাঠামোয় দক্ষতা বৃদ্ধি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাই বেশি জরুরি ছিল।
রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এনবিআরের বিদায়ী চেয়ারম্যান। রাজস্ব নীতি বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব। দুই বিভাগের অধীনে আলাদা বাজেট, নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা থাকবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্রুতই দুই বিভাগের জন্য পৃথক কার্যালয়, লজিস্টিক ও জনবল কাঠামো চূড়ান্ত করা হবে।
ডিআর/ওএফ