১৬৭ কর্মীর বেতন ‘বছরের পর বছর’ পরিশোধ করছে না নিপা ফার্মা
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১৭:৩৪
-682f0bc037845.jpg)
ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নিপা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিরুদ্ধে ১৬৭ জন সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন-ভাতা ‘বছরের পর বছর’ আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও সাবেক কর্মীদের পাওনা পরিশোধে কর্তৃপক্ষ টালবাহানা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
তাদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটির সিইও আবু সায়েদ ও এইচআর বিভাগে যোগাযোগ করেও কোনো সুষ্ঠু সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ দেড় লাখ, কেউ তিন লাখ আবার কেউ পাঁচ লাখ টাকার বেশি পাওনা থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি প্রস্তাব দিচ্ছে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা করে কিস্তিতে টাকা পরিশোধের। তাও আবার তিন-চার মাস পরপর। এতে পূর্ণ পাওনা পেতে কারও কারও সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই বছর।
তারা জানান, ২০২২ সাল থেকে নিয়মিত বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তখন মাসের পর মাস বেতন ছাড়াই কাজ করেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে কোনো সদিচ্ছা দেখা যায়নি। ৬ মাসের বেতন বকেয়া পড়ার পর একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষই বলে, কেউ চাইলে চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন। পরবর্তীতে আবার ‘বিনা নোটিশে চাকরি ছাড়ার’ অজুহাতে অনেকের বেতন কেটে রাখা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির মালিক যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নির্দেশেই দেশে বসে সিইও এবং এইচআর বিভাগ বেতন পরিশোধে গড়িমসি করছে। তবে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির হস্তক্ষেপে কেউ কেউ তাদের পাওনা টাকা পেলেও অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনও বঞ্চিত।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নিপা ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রধান কার্যালয়ে সিইও আবু সায়েদ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে যারা কাজ করছেন, তাদের বেতন-ভাতা দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। অল্প অল্প করে পরিশোধ করার চিন্তা করছি।
মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে তিনি জানান, মালিক আমেরিকায় থাকেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
সাংবাদিকদের সামনেই তিনি একাধিকবার মালিকের নম্বরে ফোন করলেও কলটি রিসিভ হয়নি। এমনকি ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও জবাব পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগীদের অনেকে বলছেন, দেশে আন্দোলনের মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরের কর্মীরা তাদের দাবি আদায় করেছেন। ‘আমরাও আর বসে থাকবো না। প্রয়োজনে শ্রম আদালতে যাব, মামলা করবো, ঘেরাও করবো,’ বলেন এক সাবেক কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা চাইলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারেন। অভিযোগ ছাড়া আমরা কিছু করতে পারবো না। যদি অভিযোগ আসে তাহলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ব্যবস্থা নিতে পারে।’
তবে এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে সিইও আবু সায়েদ বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে। আমাদের কিছুই করার নেই। মালিকও দেশে থাকেন না। আমরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে চলে যাব। এতে যারা এখন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত রয়েছেন তাদের ক্ষতি হবে।’