পুঁজিবাজার সংস্কারে বিদেশি এক্সপার্ট কেন : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১৫:৩৭

অন্তর্বর্তী সরকারের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য /ছবি : সংগৃহীত
দেশের পুঁজিবাজার বিদেশ থেকে এক্সপার্ট এনে সংস্কার করা হবে অন্তর্বর্তী সরকারের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে সংস্কারের কথা হয়েছে। বলা হচ্ছে, বিদেশ থেকে এক্সপার্ট এনে সংস্কার করা হবে। আমার প্রশ্ন দেশে কি কোনো এক্সপার্ট নেই?
শনিবার (২৪ মে) নিকুঞ্জের ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার : দর্শন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনায় মূল প্রবন্ধে তিনি একথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হতে দেখা যায়নি। ২০১০-১১ সালে ২০ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। কিন্তু তার জন্য কারোই শাস্তি হয়নি। শাস্তি যদি না হয়; অন্যায় ও দুর্নীতি রোধ করা যায় না। পুঁজিবাজারে এই মুহূর্তে যে সমস্যা আছে সেটা যদি বৃহত্তর কাঠামোতে আলোচনা না করি, তাহলে হবে না। আপনি যদি আলোচনা ছাড়া ঠিক সিদ্ধান্ত নেন, সেটাও ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, এর আগে আমরা দেখেছি, ১৯৯৬ সালে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পুঁজিবাজারে অনিয়ম হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে পথে বসিয়ে দেওয়া হয়। সে সময় বাজার থেকে বিপুল অর্থ বের করে নেওয়া হয়। তার কোনো বিচার আজও হয়নি।
প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পুঁজিবাজারে লুটপাটকারীদের বিচার না হওয়ার কারণে ২০১০ সালে আমরা একই ধরনের চিত্র দেখেছি। রাজনৈতিকভাবে সিন্ডিকেট করে পুঁজিবাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পুঁজিবাজারে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যারা অনিয়ম করেছেন তাদের কেউ কেউ জেলে আছেন। তবে তারা জেলে আছেন অন্য ঘটনায়। পুঁজিবাজারের অনিয়মের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার আশানুরূপ বিনিয়োগ, সঞ্চয় ও কর্মসংস্থান করতে পারছে না। এছাড়া এই বাজার যাদের দ্বারা পরিচালিত হয়, সেই বিনিয়োগকারী, রেগুলেটর, লিস্টেড কোম্পানি ঠিকমতো চলছে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্য মো. মোবারক হোসাইন, প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ড. তাজনুভা জাবিন, আইসিএমএবির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
এএইচএস/ওএফ