ব্যক্তিশ্রেণির কর
বাড়েনি করমুক্ত আয়ের সীমা, সর্বোচ্চ করহার ৩০% প্রস্তাব

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১৬:১৮

ছবি : সংগৃহীত
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হয়নি। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ করদাতাদের জন্য আগের মতোই করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা অপরিবর্তিত রেখেছেন।
তবে কর কাঠামোয় একটি বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছে। ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে ৩০ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। পাশাপাশি করের বিভিন্ন স্তর পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
পুনর্বিন্যাস করা করহারে প্রস্তাব অনুযায়ী, বার্ষিক আয়ের প্রথম ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করমুক্ত থাকবে। এরপর পরবর্তী ১ লাখ টাকার ওপর ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার ওপর ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার ওপর ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার ওপর ২০ শতাংশ, পরবর্তী ২০ লাখ টাকার ওপর ২৫ শতাংশ এবং এর পর অতিরিক্ত আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।
এই হিসাব অনুযায়ী, কারও বার্ষিক আয় সাড়ে ৩৮ লাখ টাকা ছাড়ালে অতিরিক্ত আয়ের ওপর ৩০ শতাংশ কর বসবে।
নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা ও প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তির জন্য করমুক্ত সীমা হবে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এই সীমা ৫ লাখ টাকা। প্রতিবন্ধী সন্তানের অভিভাবকের করমুক্ত আয়ের সীমা আরও ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে।
এ ছাড়া ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গেজেটভুক্ত গণ–অভ্যুত্থানে আহত ‘জুলাই যোদ্ধা’ করদাতাদের জন্য ২০২৬–২৭ অর্থবছর থেকে করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর ধরা হয়েছে ১ হাজার টাকা। অর্থাৎ, কেউ করমুক্ত আয়ের সীমা পেরোলেই তাকে ন্যূনতম ১ হাজার টাকা কর দিতে হবে।
বর্তমানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসকারী করদাতাদের ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা, অন্যান্য সিটি এলাকায় ৪ হাজার এবং সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে ৩ হাজার টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ১ কোটি ১১ লাখের মতো কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএনধারী) আছেন। চলতি অর্থবছরে রিটার্ন জমা দিয়েছেন প্রায় ৪০ লাখ করদাতা।
এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে রয়েছে, যার ফলে মানুষের জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে। কিন্তু মজুরির গড় হার একই সময়ে ৮ থেকে ৯ শতাংশে সীমাবদ্ধ। ফলে প্রকৃত আয় বা ক্রয়ক্ষমতা কমেছে সাধারণ মানুষের।
এআরএস