বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারে ধস, হতাশ বিনিয়োগকারীরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১৫:৫১

দেশের শেয়ারবাজারে চলমান দরপতনের ধাক্কা লেগেছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ারেও। শক্তিশালী মৌলভিত্তি ও ধারাবাহিক লভ্যাংশ প্রদানে সুপরিচিত এসব কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে দীর্ঘদিন ধরে লাভবান হয়ে আসছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু গত এক বছরে অন্তত ১০টি বহুজাতিক কোম্পানির সম্মিলিত বাজারমূল্য কমেছে প্রায় ৬ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকদের মতে, ফ্লোর প্রাইসের কৃত্রিম প্রভাব, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপে শেয়ারবাজারে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে রেহাই পায়নি ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, বার্জার পেইন্টস, লিন্ডে, বিএটিবিসি, বাটা সু, সিঙ্গার, লাফার্জহোলসিম, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, আরএকে সিরামিকস ও রেকিট বেনকিজারের মতো কোম্পানিগুলোও।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রেকিট বেনকিজারের প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ১ হাজার ৪২০ টাকা ৬০ পয়সা, যার ফলে বাজারমূল্য হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৬৭১ কোটি টাকা। অথচ কোম্পানিটি গত বছর বিনিয়োগকারীদের দিয়েছে ৩ হাজার ৩৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবিসি)। গত এক বছরে কোম্পানিটির বাজারমূল্য কমেছে ২ হাজার ৭১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। লাফার্জহোলসিমের বাজারমূল্য কমেছে ১ হাজার ২১৯ কোটি ৪৪ লাখ এবং ইউনিলিভারের ৫৩৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রিচার্ড ডি’রোজারিও বলেন, ফ্লোর প্রাইস শেয়ারবাজারের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ব্যাহত করেছে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আটকা পড়েন এবং পরে বাজার উন্মুক্ত হলে লোকসান মেনেই শেয়ার বিক্রি করে দেন।
তিনি আরও বলেন, শেয়ারদর যেভাবে কমেছে, কোম্পানির আয় সে অনুপাতে কমেনি। আস্থার সংকট কেটে গেলে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক কোম্পানির শেয়ারদর এখন মৌলভিত্তির তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে কম। দীর্ঘমেয়াদে ভালো লভ্যাংশ প্রদানকারী এসব কোম্পানি ভবিষ্যতে বড় সুযোগ এনে দিতে পারে।
ডিএসইর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বরাবরই বাজারে আস্থার প্রতীক। এখন যেভাবে অর্ধেক দামে লেনদেন হচ্ছে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরলে এগুলো বড় আকারে ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এএইচএস/ওএফ