এনবিআরের শীর্ষ ৬ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধানে মাঠে নামল দুদক

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১৭:২৭

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কিছু কর্মকর্তা ও সদস্যের বিরুদ্ধে কর ও শুল্ক আদায়ে অনিয়ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের বিপুল রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (২৯ জুন) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে এই অভিযোগের ভিত্তিতে ছয় শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, এসব কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্ধারিত কর আদায় না করে করের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। এর ফলে প্রতি বছর সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকির ভুয়া মামলা দায়ের করে অনেক ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানকে হয়রানি করা হয়েছে। অনেক করদাতা আগাম কর বা অতিরিক্ত কর পরিশোধ করার পর সেটি ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়াতেও ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কর ফেরতের নামে প্রতিটি ক্ষেত্রে ভাগ বসাচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
বিশেষভাবে যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে, তারা হলেন— ১. এ কে এম বদিউল আলম, সদস্য (আয়কর নীতি), এনবিআর;
২. মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কর কমিশনার, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা; ৩. মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার, বিসিএস কর একাডেমি; ৪. মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, উপ কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৬, ঢাকা; ৫. হাছান তারেক রিকাবদার, অতিরিক্ত কমিশনার, মূল্য সংযোজন কর গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ও ৬. সাধন কুমার কুন্ডু, অতিরিক্ত কমিশনার, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট (ঢাকা দক্ষিণ)।
দুদক সূত্র জানায়, এসব কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কর স্টেশনে দায়িত্ব পালনকালে শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর ফাঁকির সুযোগ দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে।
দুদকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই চলছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসায় কর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
এএইচএস/ওএফ