ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, দেশের লজিস্টিক খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি।
রোববার (২৯ জুন) ডিসিসিআই মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক ও সেতু) ড. শেখ মইনউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ এবং বিল্ডের (বিজনেস ইমার্জিং লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট) চেয়ারপার্সন ও সাবেক ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান।
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাংকের ২০২৩ সালের লজিস্টিক পারফরম্যান্স ইনডেক্সে বাংলাদেশ ৮৮তম অবস্থানে রয়েছে, যা অবকাঠামো দুর্বলতা ও কাস্টমস প্রক্রিয়ার জটিলতার প্রতিফলন। তিনি বন্দর, রেল, নৌ ও বিমান পরিবহনে যুগোপযোগী বিনিয়োগ এবং ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান অতিথি ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তিনির্ভর ও পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তিনি জানান, সরকার আগামী ২৫ থেকে ৫০ বছরের জন্য সমন্বিত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে।
বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান মো. সলিম উল্লাহ বলেন, সরকারের নেওয়া লজিস্টিক নীতিমালার কার্যকারিতা মূল্যায়নে ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং বিআইডব্লিউটিএ সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ করছে।
বিল্ড চেয়ারপার্সন আবুল কাসেম খান বলেন, কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রতি বছর জিডিপির ৮ থেকে ১০ শতাংশ বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। তিনি ২০২৬ থেকে ২০৩৫ সালকে “লজিস্টিক দশক” হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানান।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, দেশে লজিস্টিক ব্যয় ২৫ শতাংশ কমানো গেলে রপ্তানি অন্তত ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া রপ্তানির পণ্য বৈচিত্র্য এবং নতুন বাজার খোঁজার প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন।
আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইন্সফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) নির্বাহী পরিচালক আলমগীর মোর্শেদ, ডিপি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শামীম উল হক, বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির সভাপতি নকিব উদ্দিন খান এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার হুমায়ুন কবীর।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা নদী খনন (ড্রেজিং), বেসরকারি আইসিডি উন্নয়ন, সমন্বিত বন্দর নীতিমালা প্রণয়ন এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বিনিয়োগের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এবং পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এএইচএস/ওএফ