
ছবি : সংগৃহীত
মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ আবারও কমতে শুরু করেছে। চলতি বছরের মার্চের তুলনায় এপ্রিলে ব্যাংকের বাইরে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ কমেছে প্রায় ১৯ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদসহ খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফিরেছে, পাশাপাশি ডিজিটাল লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় নগদ টাকা হাতে রাখার প্রবণতা কমছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। এপ্রিল শেষে তা কমে দাঁড়ায় ২ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ১ মাসে নগদ টাকার পরিমাণ কমেছে ১৯ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
এর আগে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে হাতে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছিল ২৪ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, মার্চে রিজার্ভ মানি বা ছাপানো টাকার পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা। এপ্রিলে তা কমে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকায় দাঁড়ায়, অর্থাৎ ২২ হাজার ৮৮ কোটি টাকার কমতি হয়েছে। একই সময়ে বাজারে প্রচলিত টাকা বা ‘কারেন্সি ইন সার্কুলেশন’ কমেছে ১৮ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা।
২০২৪ সালের আগস্ট থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত হাতে নগদ টাকার পরিস্থিতি ছিল নিম্নরূপ: আগস্টে ২ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫৩ কোটি, অক্টোবরে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি, নভেম্বরে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৫৬ কোটি, ডিসেম্বরে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭১ কোটি, জানুয়ারিতে ২ লাখ ৭৪ হাজার ২৩০ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি, মার্চে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩১ কোটি, এপ্রিলে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘‘মূল্যস্ফীতির কারণে এক সময় মানুষ বেশি নগদ টাকা হাতে রাখতো। পাশাপাশি কিছু ব্যাংকের প্রতি আস্থার সংকটও ছিল। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মানুষ আবার ব্যাংকে টাকা রাখতে শুরু করেছে। ডিজিটাল লেনদেন সহজ হওয়ায় নগদ টাকার প্রয়োজন কমে গেছে।’’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, হাতে নগদ টাকা কমে যাওয়া একটি ইতিবাচক লক্ষণ। এতে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকার প্রবাহ বাড়ে, যা বিনিয়োগ ও ভোগব্যয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
এএইচএস/এএ