Logo

অর্থনীতি

পোশাক নিয়ে নির্দেশনা

‘স্বাধীনতা খর্ব নয়, শালীনতায় জোর’ বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক

Icon

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫২

আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪৭

‘স্বাধীনতা খর্ব নয়, শালীনতায় জোর’ বলছে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ‘শালীন ও পেশাদার’ পোশাক পরিধানে পরামর্শ দিয়ে একটি দিকনির্দেশনামূলক সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে নারী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার–কামিজ ও ওড়না এবং অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক পরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস অর্থাৎ ছোট হাতা ও ছোট দৈর্ঘ্যর পোশাক ও লেগিংস পরিহার করতে বলা হয়েছে। এমন খবর প্রকাশের পরে এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই সার্কুলার বাধ্যতামূলক নয় এবং এতে ব্যক্তিগত বা ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়নি।

কী আছে সার্কুলারে?

বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এক ক্ষুদে বার্তায় জানান, কর্মস্থলে পারস্পরিক সম্মান ও সৌহার্দ্য বজায় রেখে একটি পেশাদার কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতেই এ সার্কুলার দেওয়া হয়েছে। এতে কারও ওপর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

তিনি জানান, পোশাকের ধরনে বৈচিত্র্য থাকায় সহকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি বা মানসিক দূরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। তাই দিকনির্দেশনা হিসেবে এ সার্কুলারে পোশাকে শালীনতা ও মার্জিত রুচির প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

নারী সহকর্মীদের বোরখা বা হিজাব পরায় কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই বলে স্পষ্ট করেন মুখপাত্র। তিনি বলেন, বরং অতিরিক্ত কারুকার্যপূর্ণ পোশাক নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

পোশাক সংক্রান্ত পরামর্শ

পুরুষদের জন্য : ফরমাল শার্ট (হাফ বা ফুল হাতা), ফরমাল প্যান্ট (জিন্স বা গ্যাবার্ডিন নয়), ফরমাল জুতা।

নারীদের জন্য : শাড়ি, সালোয়ার কামিজ ও ওড়না, হালকা রঙের সাদামাটা পোশাক, ফরমাল স্যান্ডেল/জুতা। হেডস্কার্ফ ঐচ্ছিক। শর্ট স্লিভ, লেগিংস জাতীয় পোশাক নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

শিষ্টাচার ও মনিটরিং

কর্মক্ষেত্রে শালীনতা, সততা, সময়ানুবর্তিতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বিভাগ/ইউনিটে একজন করে কর্মকর্তা মনোনীত হবেন, যিনি নির্দেশনার বাস্তবায়ন তদারকি করবেন এবং ব্যত্যয়ের ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রধানকে অবহিত করবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে পূর্বের অফিস নির্দেশনা অনুসরণের নির্দেশ রয়েছে। যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রাপ্তির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নির্ধারিত কমিটিতে প্রেরণের বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া

সামাজিক মাধ্যমে অভিযোগ উঠেছে, এই সার্কুলারের মাধ্যমে স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাষ্য— এটি কেবল পরামর্শমূলক নির্দেশনা। সার্কুলারে ২০০৩ সালের বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশনের ধারাগুলোর কথাও স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে নারী সহকর্মীদের প্রতি শালীন আচরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পেশাগত পরিবেশ উন্নয়ন ও সৌহার্দ্য রক্ষার উদ্দেশ্যেই এ ধরনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি কোনোভাবেই ব্যক্তি স্বাধীনতা বা ধর্মীয় বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ নয়।

এএইচএস/এমবি/এইচকে

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশ ব্যাংক

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর