Logo

অর্থনীতি

সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, তবু কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হচ্ছে না : অর্থ উপদেষ্টা

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ২১:৩১

সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, তবু কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হচ্ছে না : অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

সুশাসনের অভাব, শাসনব্যবস্থায় কাঠামোগত দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক সংস্কারের ঘাটতির কারণে দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হচ্ছে না। এরপরও আমরা এমন কিছু পদচিহ্ন রেখে যেতে চাই, যা ভবিষ্যতের সরকার অনুসরণ করে উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে পারে।

শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের গ্রন্থ ‘অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা : জাপিত জীবনের আলেখ্য’ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি জটিল বাস্তবতার দেশ শাসন করা সহজ নয়। এখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠা চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, সরকারপ্রধান ও সংসদ সদস্যদের কর্মকাণ্ডে কার্যকর ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ নেই। এই কাঠামোগত ঘাটতি দূর না করা গেলে নীতিগত সংস্কারও স্থায়ী ফল দেবে না।

ব্যাংকিং খাতের সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানরা তহবিলের ৮০ শতাংশের মতো অর্থ লুট করে বিদেশে চলে গেছেন। যদি কোনো ব্যাংকের মোট ঋণ ২০ হাজার কোটি টাকা হয়, তার মধ্যে ১৬ হাজার কোটিই দুর্নীতির ফাঁদে পড়ে গেছে।

তিনি জানান, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে অন্তত ৩৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রাথমিকভাবে ১৮ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছিল।

কর-জিডিপি অনুপাত নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এটি এখনো মাত্র ৭.৫ শতাংশ, যা বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায়ও কম। অথচ নরওয়ে ও সুইডেনের মতো দেশে এই অনুপাত অনেক বেশি। উন্নয়ন টেকসই করতে হলে কর আদায় কাঠামোতে আমূল সংস্কার প্রয়োজন।

এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক ব্যবসায়ী এর বিরোধিতা করছেন। তবে বাস্তবতা হলো—আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জন না করলে উত্তরণের পর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।

সভায় বইয়ের লেখক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনীতি, শাসন ও ক্ষমতা—এই তিনটি স্তম্ভের ভারসাম্য ছাড়া কোনও সমাজ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন অর্জন করতে পারে না।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি এম হুমায়ুন কবির, বিশ্লেষক অলতাফ পারভেজ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অধ্যাপক আবু আহমেদ, গবেষক খন্দকার সাখাওয়াত আলী, ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুল মজিদ।

অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, বছরের পর বছর ধরে চলে আসা সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না করা হলে দেশ ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সংকটে পড়বে।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রতিযোগিতাহীন রাজনৈতিক পরিবেশ বিগত এক যুগে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে। এখন সময় হয়েছে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার।

ডিআর/এমএইচএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

সালেহ উদ্দিন আহমেদ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর