বাড়তি শুল্ক আমদানিকারক ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকেই দিতে হবে : বিজিএমইএ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ আগস্ট ২০২৫, ২১:৩৩

বিজিএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামানো হয়েছে। এর ফলে গত তিন মাস ধরে চলা অনিশ্চয়তা কিছুটা কাটল। তবে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকদের জন্য পণ্য সংগ্রহে ব্যয় বাড়ছে। এতে বাড়তি শুল্ক আমদানিকারক ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকেই দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ’র সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু।
শুক্রবার (১ আগস্ট) পোশাক রপ্তানির ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামানোর প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘অনিশ্চয়তার মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা কঠিন। মার্কিন ক্রেতারাও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। শেষ পর্যন্ত শুল্ক হার কমায় আমাদের জন্য স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’
তিনি জানান, শুল্ক হ্রাসের ফলে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান কিছুটা শক্ত হয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তানের চেয়ে ১ শতাংশ বেশি শুল্ক দিতে হলেও ভারতের চেয়ে ৫ শতাংশ এবং চীনের চেয়ে ১০ শতাংশ কম শুল্ক হার প্রযোজ্য হচ্ছে। ‘এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক,’ বলেন মাহমুদ হাসান খান বাবু।
তবে সতর্ক করে দিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকদের জন্য পণ্য সংগ্রহে ব্যয় বাড়বে। এর প্রভাব পড়বে মূলধনে। যার ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান অর্ডার কমাতে পারে। শেষ পর্যন্ত খরচের এই চাপ ভোক্তার ওপরেই পড়বে।
‘আমি আমাদের সদস্যদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, বাড়তি শুল্ক আমদানিকারক ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকেই দিতে হবে। দিন শেষে এই খরচ ভোক্তাদেরই বহন করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি আরও জানান, গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম দফায় সব দেশের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। মার্কিন ক্রেতারা সে চাপ কোনোভাবে সামাল দিলেও কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদেরই বাড়তি খরচ ভাগ করে নিতে হয়েছে।
এদিকে চীনের ওপর এখনও ৩০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বহাল রয়েছে। অচিরেই দেশটির ওপর চূড়ান্ত হার ঘোষণা আসবে বলে জানা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সেটি বাংলাদেশের চেয়ে কম হবে না। এর ফলে চীন থেকে অর্ডার সরিয়ে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে দেওয়ার প্রবণতা আরও বাড়তে পারে।
এ সুযোগ কাজে লাগাতে হলে জ্বালানি সরবরাহ, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি।
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হওয়া চুক্তির খসড়া ও সারসংক্ষেপ জানা গেলেও পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনো মেলেনি। তবে তিনি আশা করছেন, বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে চুক্তি সম্পাদন করেছে।
চুক্তির আওতায় গম, তুলা, এলএনজি কেনাসহ বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি উড়োজাহাজ কেনার মতো দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতিও রয়েছে। ‘এ প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, না হলে ভবিষ্যতে আবার জটিলতায় পড়তে হবে,’ বলেন মাহমুদ হাসান খান।
এএইচএস/এমবি