২০% মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহার মিলবে পুরো শুল্ক ছাড় : বিজিএমইএ সভাপতি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ২০:৪২
-688e23c589f74.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশে নামানো হয়েছে। তবে এর মধ্যেও একটি বড় স্বস্তির খবর হলো— যদি কোনো পোশাকপণ্যে ২০ শতাংশের বেশি মার্কিন কাঁচামাল (যেমন মার্কিন তুলা) ব্যবহার করা হয়, তাহলে সেই পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হবে না।
শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৭৫ শতাংশ রপ্তানি পোশাক তুলা নির্ভর। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, যদি অন্তত ২০ শতাংশ কাঁচামাল মার্কিন উৎস থেকে আসে, তাহলে ওই পণ্যে বাড়তি শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। এই সুযোগ কাজে লাগাতে উদ্যোক্তাদের মার্কিন কাঁচামাল ব্যবহারে উৎসাহিত করছি।’
তিনি আরও বলেন, নতুন হার অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন ২০ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে রপ্তানি করতে পারছে, যেখানে ভারতের ক্ষেত্রে তা ২৫ শতাংশ, চীনের ৩০ শতাংশ। এই শুল্ক ভারসাম্য কিছুটা হলেও প্রতিযোগিতায় সুবিধা এনে দেবে বলে মনে করেন তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতির ভাষায়, ‘আমরা মার্কিন প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আমাদের দীর্ঘদিনের উদ্বেগ অনেকটাই কমিয়েছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এখানেই থেমে গেলে চলবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে কিছু দেশকে নিয়ে নিরাপত্তা ও বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় রয়েছে। এসব চুক্তি হলে তাদের শুল্ক আরও কমে যেতে পারে, যা বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে পেছনের ঘটনাপ্রবাহও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, চলতি বছরের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ‘লিবারেশন ডে ট্যারিফ’ ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা ছিল ভারতের (২৬%), ইন্দোনেশিয়ার (৩২%) ও পাকিস্তানের (৩০%) তুলনায় অনেক বেশি। এতে বাংলাদেশের রপ্তানিতে তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে।
তবে আলোচনার জন্য এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়। তার মধ্যেই বিজিএমইএ সরকারের সহায়তায় মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকে অংশ নেয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা তথ্য দিয়ে সরকারের পাশে ছিলাম, সরকার আন্তরিকভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে বলেই এ সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।’
ভবিষ্যতের করণীয় হিসেবে বিজিএমইএ সভাপতি ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলোর সহায়তা, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহে নিরবচ্ছিন্নতা ও শিল্পবান্ধব কাস্টমস নীতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘শিল্প, সরকার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শ্রমিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজ একসঙ্গে কাজ করলে এই সংকট আগামীতে সম্ভাবনায় রূপ নিতে পারে।’
এএইচএস/এমএইচএস