Logo

অর্থনীতি

আইন লঙ্ঘন করে চলছে ‘পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক’

নুর মোহাম্মদ মিঠু নুর মোহাম্মদ মিঠু

আনোয়ার হোসাইন সোহেল আনোয়ার হোসাইন সোহেল

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ১৬:০৭

আইন লঙ্ঘন করে চলছে ‘পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক’

বাংলাদেশ পুলিশের মালিকানাধীন কমিউনিটি ব্যাংক লিমিটেড দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (এমডি) দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ অনুযায়ী, কোনো ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ তিন মাসের বেশি শূন্য রাখা যায় না। এই আইন অমান্য করে কমিউনিটি ব্যাংক বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত এমডি কিমিয়া সাদাতের অধীনে কার্যক্রম চালাচ্ছে।

কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশের ৫৯তম বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে। ব্যাংকটি ১৮টি শাখা, ৫টি উপশাখা এবং প্রায় ২০০টি এটিএম ও সিআরএম-এর মাধ্যমে সারাদেশে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। ব্যাংকটি শতভাগ বাংলাদেশ পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের মালিকানাধীন।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত এমডি কিমিয়া সাদাত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে পূর্ণাঙ্গ এমডি হিসেবে নিয়োগ পাবেন। কমিউনিটি ব্যাংকে যোগদানের আগে কিমিয়া সাদাত মেঘনা ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং দেশীয় ও বহুজাতিক ব্যাংকিংয়ে ২২ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং থেকে এমবিএ ডিগ্রির পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল কনসালট্যান্ট (আইএফসি, কানাডা) থেকে তিনি সার্টিফায়েড ফিন্যান্সিয়াল কনসালট্যান্ট (সিএফসি) সনদপ্রাপ্ত।

কমিউনিটি ব্যাংক তার অনুমোদনের শর্ত ভঙ্গ করে মূলধন বাজারে তালিকাভুক্তি না করায় ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মাবলীর পরিপন্থী কাজ করেছে। এই তালিকাভুক্তি শর্ত লঙ্ঘনের কারণে ব্যাংক আইনগতভাবে গুরুতর লঙ্ঘনের মধ্যে পড়েছে।

এ বিষয়ে কমিউনিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুলিশের সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেনের মাধ্যমে বক্তব্য চাওয়া হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরদের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

একইভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় ব্যাংকের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ও র‍্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমানের সঙ্গেও। তাদেরও কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ক্ষুদেবার্তা পাঠানোর তিন দিন পরও প্রতিউত্তর করেননি র‍্যাব ডিজি। 

ব্যাংকের আরেক পরিচালক হাইওয়ে পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মুনতাসিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওখানে আমি নেই, কেউ নেই।’ তিনি র‍্যাবের ডিজি এবং এসবি প্রধানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এসবি প্রধানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্যও পাওয়া যায়নি। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বাংলাদেশের খবরকে জানিয়েছেন, ‘তিন মাসের বাধ্যবাধকতা মেনে কমিউনিটি ব্যাংক এমডির নিয়োগের জন্য আবেদন করেছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো সেই আবেদন চূড়ান্ত করেনি।’ এমডির বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পুলিশ বলেই কী বাড়তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি নিশ্চিত করেছেন, কোনো বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না এবং আইন মেনে এমডির নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে।

এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর