একীভূতকরণে আপত্তি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:১৭

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি (এসআইবিএল) কর্তৃপক্ষ কয়েকটি রুগ্ন ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত না করার যুক্তি তুলে ধরেছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, উপযুক্ত পরিচালনা পর্ষদ ও উদ্যোক্তাদের হাতে ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে দিলে ব্যাংকটি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে মার্জার সংক্রান্ত আলোচনার আগে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান (২০১২-১৭) মেজর (অব.) ডা. মো. রেজাউল হক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
১৯৯৫ সালের ২২ নভেম্বর ‘সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড’ নামে কার্যক্রম শুরু করে এসআইবিএল। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আব্দুর রহমান বিশ্বাস ব্যাংকটির উদ্বোধন করেন। ব্যাংকটি শুরুর পর থেকে দীর্ঘ সময় দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এস. আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর লুটপাট ও অনিয়মের কারণে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ব্যাংকটির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডারদের হাতে পরিচালনা ক্ষমতা ফিরিয়ে দিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় গ্রাহকের আস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
এসআইবিএল-এর ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি বিবেচনা করে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে শাখা খোলার অনুমোদন দিয়েছিল। সঠিক পরিচালনা থাকলে বিদেশেও ব্যাংকের কার্যক্রম বিস্তৃত করার সুযোগ আছে।
খ্যাতনামা ব্যবসায়ী গ্রুপ ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে তারল্য সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
ব্যাংকের ১৮১টি শাখা, ২৪০টি উপশাখা ও ৩৭০টি এজেন্ট আউটলেটের বিস্তৃত নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে দ্রুত মূলধন প্রবাহ বাড়ানো যাবে।
প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) বাড়িয়ে ব্যাংকটিকে আবারও প্রবাসী বাংলাদেশিদের আস্থার প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এসআইবিএল-এর দাবি, রুগ্ন ইসলামী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে জোরপূর্বক একীভূত করলে কেবল ব্যাংকটির সুনামই নষ্ট হবে না, বরং আর্থিক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাও ব্যাহত হবে। তাই ব্যাংকটির ঐতিহ্য, উদ্যোক্তাদের অবদান ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিবেচনা করে একীভূতকরণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ব্যাংকের জনশক্তির পুনঃবিন্যাসের মাধ্যমে তাদের বিপণন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে আমানত আহরণে জোর প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। দক্ষ জনশক্তিকে যথাস্থানে পদায়ন (পোস্টিং) দিয়ে ব্যাংকের অভ্যন্তরীন কার্যক্রম গতিশীল করা হবে।
সরকারি, বেসরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে (পল্লী বিদ্যুৎ, ডেসকো, ডিপিডিসি, ওয়াসা, তিতাস, বিটিসিএল, বিআরটিএ, পাসপোর্টসহ বিভিন্ন সংস্থার) ২২টি কালেকশন অ্যাকাউন্ট পুনঃসক্রিয়করণের মাধ্যমে ব্যাংকের চলমান টাকার নগদ প্রবাহ বৃদ্ধি করা হবে।
ব্যাংকের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় যথা- অলাভজনক শাখা, উপশাখা ও এটিএম বুথ ইত্যাদি যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বন্ধ/পুনঃবিন্যাস/একীভূতকরণ করা হবে। খেলাপী ঋণ আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত জোরালো পদক্ষেপ ও সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডা. মো. রেজাউল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত সুদবিহীন নগদ সহায়তা ও উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারদের হাতে ব্যাংক পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত করা হোক। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যাংকটি পূর্বের ন্যায় ভালো অবস্থানে নেওয়ার সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এএইচএস/এমবি