Logo

অর্থনীতি

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার আন্তঃলেনদেনের পথে বাংলাদেশ

Icon

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:১৬

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যকার আন্তঃলেনদেনের পথে বাংলাদেশ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

বাংলাদেশে শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে ইনক্লুসিভ ইনস্ট্যান্ট পেমেন্ট সিস্টেম (আইআইপিএস)। এ উদ্যোগের মাধ্যমে মোবাইল ওয়ালেট, ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে একই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করে সহজ, দ্রুত ও সাশ্রয়ী ডিজিটাল লেনদেন নিশ্চিত করা হবে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এক আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় আন্তঃসংযোগযোগ্য পেমেন্ট ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে সরকারি ভাতা, ভর্তুকি ও বেতন সরাসরি এবং স্বচ্ছভাবে জনগণের হাতে পৌঁছাবে। পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে নতুন সেবা উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হবে।

গভর্নর জানান, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অগ্রগতি হলেও এখনো প্রায় ৩৫-৪০ শতাংশ মানুষ আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থার বাইরে। শুধু কভারেজ নয়, জনগণের গভীর সম্পৃক্ততাই প্রকৃত অন্তর্ভুক্তির মানদণ্ড হবে। এজন্য মাইক্রোক্রেডিটকে প্রযুক্তিনির্ভর করার পাশাপাশি এজেন্ট ব্যাংকিং সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

বর্তমানে দেশে প্রায় ২০ হাজার এজেন্ট কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে ঋণ বিতরণে আরও অগ্রসর হতে হবে বলে মন্তব্য করেন গভর্নর।

নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অন্তত ৫০ শতাংশ এজেন্ট নারী হতে হবে বলে নির্দেশনা দেন তিনি। এতে ঘরে ঘরে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর জন্য ক্রেডিট কার্ড ইস্যুর সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া হয়েছে। যা গ্রাহক সুবিধার পাশাপাশি রাজস্ব আয়ও বাড়াবে।

মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে ন্যানো লোনের সীমা ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। তবে নগদ নির্ভরতা কমাতে মোবাইল ওয়ালেট থেকে টাকা নগদে উত্তোলনের প্রবণতা নিরুৎসাহিত করার জন্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে ‘বাংলা কিউআর কোড’ বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গভর্নর জানান, নগদ টাকার চাহিদা প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এর ফলে ব্যাংক খাতে বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে এবং সরকারের সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতি দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। তাই নগদ নির্ভরতা কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেন বাড়ানো সময়ের দাবি।

ড. মনসুর বলেন, ডিজিটাল ব্যাংক চালুর প্রক্রিয়া চলছে এবং সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে একক তাৎক্ষণিক পেমেন্ট সিস্টেমে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পরীক্ষিত মডেল ‘মোজালুপ’ ব্যবহার করে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে ২০ কোটির বেশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট থাকলেও এখনও প্রায় অর্ধেক প্রাপ্তবয়স্ক জনগণ আর্থিক সেবার বাইরে। গ্রামীণ-শহর বৈষম্য, লিঙ্গভিত্তিক ব্যবধান ও সীমিত আন্তঃসংযোগই বড় চ্যালেঞ্জ।

আলোচনায় তানজানিয়ার টিআইপিএস, পাকিস্তানের আরএএএসটি এবং রুয়ান্ডার এনডিপিএস ২.০ উদাহরণ টেনে বলা হয়, এসব দেশে আন্তঃসংযোগযোগ্য পেমেন্ট ব্যবস্থায় খরচ কমেছে, দক্ষতা বেড়েছে এবং প্রান্তিক জনগণের অংশগ্রহণও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এএইচএস/এমবি 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর