সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংকগুলো একীভূত, প্রশাসকের দায়িত্ব পাচ্ছেন ৫ নির্বাহী
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫:২১
গ্রাফিক্স : বাংলাদেশের খবর
সংকটে থাকা পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করে একটি বড় ইসলামী ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি ব্যাংকে একজন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসকদের সহযোগিতার জন্য আরও চারজন করে কর্মকর্তার একটি টিম গঠন করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, ব্যাংকগুলো হলো– এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। প্রশাসক হিসেবে এক্সিম ব্যাংকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্বাহী পরিচালক মো. শওকাতুল আলমকে। বাকি চারটি ব্যাংকে দায়িত্ব পেয়েছেন ১৯৯৯ ব্যাচের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা– মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার (সোশ্যাল ইসলামী), মো. সালাহ উদ্দিন (ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী), মো. আবুল হাসেম (ইউনিয়ন) এবং মো. মোকসুদুজ্জামান (গ্লোবাল ইসলামী)।
প্রতিটি ব্যাংকের প্রশাসক একই দিন দায়িত্ব নেবেন। এরপর ব্যাংকগুলোর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ নিষ্ক্রিয় হবে এবং এমডির চুক্তি বাতিল হবে। তবে ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হবে কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
প্রশাসকদের মূল লক্ষ্য হবে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেওয়া এবং কর্মকর্তা–কর্মচারীদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। পাশাপাশি, জাল সনদে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একীভূতকরণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৩৫,২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সরকারের অংশ ২০,২০০ কোটি, বাকি ১৫,০০০ কোটি টাকা আসবে আমানত বীমা ট্রাস্ট তহবিল ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর শেয়ার দিয়ে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, একীভূতকরণের চূড়ান্ত পর্ব চলছে। প্রতিটি ব্যাংকে প্রশাসক নিয়োগের পর নতুন ব্যাংক গঠন করা হবে এবং সেখানে নতুন পরিচালনা পর্ষদ ও এমডি থাকবেন। এরপর প্রশাসকরা আবার বাংলাদেশ ব্যাংকে ফিরে যাবেন।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রাথমিক একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিদেশি অডিট ফার্ম আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং ও কেপিএমজি ব্যাংকগুলোর সম্পদের মান যাচাই করেছে। এছাড়া, ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ–২০২৫’ জারি করে আইনি বাধা দূর করা হয়েছে।
একীভূতকরণের শেষ পর্যায়ে ব্যাংকগুলো একত্রিত হয়ে নতুন ব্যাংকে রূপান্তরিত হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং আমানতকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করাই প্রধান লক্ষ্য।
- এএইচএস/এমআই

