পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
 
						জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:০৭
-(15)-6900a40f1f314.jpg) 
					ছবি : বাংলাদেশের খবর
পুঁজিবাজারের বিকাশ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) তালিকাভুক্তি এবং নতুন আর্থিক পণ্য উদ্ভাবনে একসঙ্গে কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে ডিসিসিআই কার্যালয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এবং ডিসিসিআই’র সভাপতি তাসকিন আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ডিএসই’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুর রহমান বলেন, ডিসিসিআই-এর সঙ্গে এই চুক্তি পুঁজিবাজার উন্নয়নে যৌথ সহযোগিতার নতুন অধ্যায় সূচনা করবে। তিনি জানান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বাজারে সম্পৃক্ত করতে ডিএসই একটি বিশেষ দল গঠন করবে, যারা ডিসিসিআই-এর সঙ্গে সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও লিস্টিং প্রক্রিয়ায় কাজ করবে।
ডিসিসিআই সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, “এই সমঝোতা কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি—যার মাধ্যমে বেসরকারি খাত ও পুঁজিবাজার পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠবে।” তিনি মনে করেন, ব্যাংকনির্ভর অর্থনীতি থেকে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের এখনই উপযুক্ত সময়।
ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, “জাতীয় অর্থনীতির চাহিদা অনুযায়ী পুঁজিবাজার এখনো প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। ব্যাংকিং খাতের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা টেকসই উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।” তিনি বাজারে ভারসাম্য আনতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন বিনিয়োগ পণ্য চালু ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন।
তিনি আরও জানান, ডিএসই একটি সমন্বিত প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলছে, যেখানে বিনিয়োগকারী, কোম্পানি, ফান্ড ম্যানেজারসহ সংশ্লিষ্ট সবাই একই প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত থাকবে।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজিব এইচ চৌধুরী বলেন, এসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহজে পুঁজিবাজারে আনতে এটি হবে একটি মাইলফলক উদ্যোগ। তিনি বলেন, “আমরা চাই বিনিয়োগকারীরা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যেমন যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় সহজে ট্রেড করে, তেমনি বাংলাদেশেও সহজে করতে পারেন।”
ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, দেশের জিডিপি ও বাজার মূলধনের অনুপাত এখনো নিচু পর্যায়ে আছে। দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য ব্যাংক নয়, পুঁজিবাজারই হতে পারে টেকসই বিকল্প।
অন্যদিকে, ডিসিসিআই পরিচালক সাঈদ মামুন কাদের বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি ও শিক্ষার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “শুধু অবকাঠামো নয়, বিনিয়োগ বিষয়ে শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি।”
ডিএসই পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, বাজারের স্থিতিশীলতার জন্য শক্তিশালী ও ফান্ডামেন্টাল ভালো কোম্পানির অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, দুই প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে গবেষণা, নীতি প্রস্তাবনা, প্রশিক্ষণ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও সেমিনার আয়োজন করবে। ডিএসই লিস্টিং সংক্রান্ত কারিগরি সহায়তা ও প্রচারণায় অংশ নেবে, আর ডিসিসিআই তার সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজারে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করবে।
সমঝোতার বাস্তবায়ন তদারকিতে একটি যৌথ কার্যকরী কমিটি (জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ) গঠন করা হবে, যা নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।অ
অনুষ্ঠানে ডিএসই ও ডিসিসিআই উভয় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
- এএইচএস/এমআই


 
			