সঞ্চয়পত্রে জালিয়াতির ঘটনায় ৩ ব্যাংক হিসাব জব্দ
 
						জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৩
 
					কোলাজ : বাংলাদেশের খবর
সঞ্চয়পত্র সার্ভারে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তিনটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একই সঙ্গে সঞ্চয়পত্র কেনাবেচায় যুক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার কম্পিউটারও জব্দ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গঠিত তদন্ত কমিটি বুধবার (২৯ অক্টোবর) এই ব্যবস্থা নেয়। ঘটনার পর সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সিস্টেমের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে কেনা ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র জালিয়াত চক্র তুলে নেয়। অগ্রণী ব্যাংকের জাতীয় প্রেস ক্লাব শাখার বিপরীতে কেনা ওই সঞ্চয়পত্রের অর্থ এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার এক ব্যক্তি— আরিফুর রহমানের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। পরে তিনি ঢাকার শ্যামলী শাখা থেকে নগদ টাকা তোলেন।
একই প্রক্রিয়ায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের একটি হিসাবে ৩০ লাখ এবং এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে তোলার চেষ্টা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এলে লেনদেনগুলো আটকে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিএফআইইউ এই তিনটি হিসাব জব্দ করে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সার্ভার হ্যাক কিংবা কেন্দ্রীয় সার্ভারে নিয়ন্ত্রণে থাকা কেউ এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী লেনদেনের সময় গ্রাহকের মোবাইলে ওটিপি (ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড) না গেলে তথ্য পরিবর্তনের সুযোগ নেই। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কোনো গ্রাহকের মোবাইলে ওটিপি যায়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘কীভাবে জালিয়াতি হয়েছে তা উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। যাদের হিসাবে টাকা গেছে, তাদের শনাক্ত করে মামলা করা হবে।’ মতিঝিল থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকসহ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের মোট সঞ্চয়পত্রের পরিমাণ তিন লাখ ৪০ হাজার ৭১ কোটি টাকা। এসব সঞ্চয়পত্র কেনা-বেচার সুযোগ আছে প্রায় ১২ হাজার শাখায়। এখন পর্যন্ত কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসেই এই জালিয়াতি ধরা পড়েছে। অন্য কোথাও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সিস্টেমে জালিয়াতির প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন, পরিকল্পনা ও টিডিএম) মো. হাসানুল মতিনকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রওশন আরা বেগম, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. জিয়াউল আবেদীন, যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল আমীন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালক, সিআইডির একজন ডিআইজি ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব।
এএইচএস


 
			