Logo

অর্থনীতি

‘নগদহীন’ অর্থনীতির পথে বাংলাদেশ

ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে ১২ প্রতিষ্ঠান

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

আনোয়ার হোসাইন সোহেল

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:০৮

ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে ১২ প্রতিষ্ঠান

প্রতীকী ছবি

নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে সম্পূর্ণ ডিজিটাল অর্থনীতির পথে অগ্রসর হতে চায় সরকার। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে দেশের ১২টি প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে রয়েছে বিকাশ, রবি, আকিজ রিসোর্স, ওয়ান ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংকসহ শীর্ষস্থানীয় করপোরেট ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।

আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো
ব্রিটিশ বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, ভুটানের ডিজিটাল ব্যাংকিং-ডিকে, আমার ডিজিটাল ব্যাংক-২২এমএফআই, ৩৬ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, বুস্ট-রবি, আমার ব্যাংক (প্রস্তাবিত), অ্যাপ ব্যাংক- কৃষক, নোভা ডিজিটাল ব্যাংক- বাংলালিংক অ্যান্ড স্কোয়ার, মৈত্রী ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি, উপকারী ডিজিটাল ব্যাংক, মুনাফা ইসলামি ডিজিটাল ব্যাংক- আকিজ এবং বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক।

অর্থমন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সরকার মনে করছে, ডিজিটাল ব্যাংক চালু হলে মোবাইলের মাধ্যমেই টাকা স্থানান্তর, জমা, ঋণ, বিল পরিশোধসহ সব ধরনের আর্থিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে। এতে একদিকে যেমন নগদ অর্থের ওপর নির্ভরতা কমবে, অন্যদিকে বাড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও রাজস্ব আয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই শেষে নীতিমালা অনুযায়ী উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের বিদ্যমান মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) খাতের শীর্ষ খেলোয়াড়, যারা ইতোমধ্যে কোটি কোটি গ্রাহকের আস্থা অর্জন করেছে।

ডিজিটাল ব্যাংকিং চালুর মাধ্যমে সরকার নগদ লেনদেনের বিশাল ব্যয়ও কমাতে চায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর টাকা ছাপানো, সরবরাহ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ব্যয় হয় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন বাড়লে এই ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হবে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, সম্পূর্ণ ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় লেনদেনের স্বচ্ছতা বাড়বে, কর ফাঁকি কমবে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি আরও বিস্তৃত হবে। বিশেষ করে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা পেলে দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে নতুন গতি আসবে।

ডিজিটাল ব্যাংক চালুর মাধ্যমে ‘নগদহীন অর্থনীতি’র যে স্বপ্ন সরকার দেখছে, সেটি বাস্তবায়িত হলে অর্থনীতির গতিপথে বড় পরিবর্তন আসবে— এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও চিফ ইকোনমিস্ট মো. হেলাল আহমেদ জনি বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘ডিজিটালাইজড ব্যাংকিং সিস্টেমে আরো আগেই যাওয়া উচিত ছিল। আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি। শুধু ব্যাংক ডিজিটাল করলে হবে না, প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। এছাড়া আন্তব্যাংক ট্রানজেকশন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ক্যাশলেস সিস্টেম নিশ্চিত করতে হবে।’

বর্তমান ব্যাংক নীতিমালার মধ্যে ডিজিটাল ইসলামী ব্যাংক চলতে পারবে কিনা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বিদ্যমান ডিজিটাল ব্যাংক আইনের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল ইসলামী ব্যাংক’ পরিচালনা করা সম্ভব। এতে আইনের কোনো সংশোধনী আনার প্রয়োজন নেই। ক্যাশলেস নয়, নগদ টাকার বিনিময় কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।

এমএইচএস 

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

ডিজিটাল ব্যাংকিং

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর