‘সি’ গ্রেডের গভর্নরে চলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:৪২
ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক আর্থিক সাময়িকী গ্লোবাল ফাইন্যান্স–এর ২০২৫ সালের মূল্যায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর পেয়েছেন ‘সি’ গ্রেড। অর্থাৎ, তার নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পারফরম্যান্সকে ‘মিশ্র’ বা মাঝারি মানের হিসেবে দেখেছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, প্রবৃদ্ধি অর্জন, মুদ্রার স্থিতিশীলতা ও নীতিগত বিশ্বাসযোগ্যতা- এই চারটি সূচকে গড়পড়তা ফল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গ্লোবাল ফাইন্যান্সের ‘সেন্ট্রাল ব্যাংকার রিপোর্ট কার্ড ২০২৫’-এ বিশ্বের ১০০টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে শ্রীলঙ্কার নন্দলাল উইরাসিংহে ‘এ’ গ্রেড এবং ভিয়েতনামের নুয়েন থি হং ‘এ প্লাস’ পেয়েছেন। তুলনায়, বাংলাদেশের সাবেক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ২০২৩ সালে ‘ডি’ গ্রেড পেয়েছিলেন।
২০২৪ সালের আগস্টে দায়িত্ব নেওয়া আহসান এইচ মনসুর এমন এক সময় নেতৃত্ব গ্রহণ করেন, যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের দুরবস্থা, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছিল। দায়িত্ব নিয়ে তিনি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রিপো রেট ৮.৫% থেকে বাড়িয়ে ১০% করেন। এতে কিছুটা ফল মিললেও ২০২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়ায় ৩.৯%, যা গত দশকের গড় ৬% থেকে অনেক নিচে।
গভর্নর মনসুর আইএমএফের সহায়তায় তিন বছরের ব্যাংকখাত সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন- যার লক্ষ্য খেলাপি ঋণ কমানো, দেউলিয়া আইন আধুনিকীকরণ ও ব্যাংক পরিচালনায় জবাবদিহিতা বাড়ানো।
তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, নীতিগত দিকনির্দেশনা যুক্তিসংগত হলেও বাস্তবায়ন পিছিয়ে আছে, ফলে জনগণের আস্থা পুরোপুরি ফিরে আসেনি।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ‘সি’ গ্রেড ইঙ্গিত দেয় যে নীতি সঠিক পথে থাকলেও বাস্তব ফল এখনো দৃশ্যমান নয়। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ অনিয়ম ও ডলারবাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে না আসায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনো কঠিন পরীক্ষায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ড. মনসুর কারিগরি দিক থেকে দক্ষ হলেও সংস্কারের গতি কম, যার ফলে আন্তর্জাতিক মহল দ্রুত ও দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চায়। তারা মনে করেন, নীতির ধারাবাহিকতা ও বাস্তব প্রয়োগ বাড়াতে পারলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পারফরম্যান্স আরও উন্নত হতে পারে।
এএইচএস/এমআই

