
ইংল্যান্ডের শিক্ষকদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এআই ব্যবহার করে খাতা মূল্যায়ন ও অভিভাবকদের জন্য চিঠি লেখার মতো রুটিন কাজগুলো দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে পারবেন।
নতুন প্রশিক্ষণ উপকরণে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা এআই ব্যবহার করে নিয়মিত প্রশাসনিক কাজগুলো স্বয়ংক্রিয় করতে পারবেন, যাতে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আরও ‘গুণগত সময়’ কাটাতে পারেন।
তবে শিক্ষকরা যেন এআই ব্যবহারে স্বচ্ছতা বজায় রাখেন এবং এর ফলাফল অবশ্যই যাচাই করেন—এমন নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। খবর- যুক্তরাজ্যভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক অনলাইন সংবাদমাধ্যম আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিউজের।
ইংল্যান্ডের স্কুল ও কলেজ নেতাদের সংগঠন এএসসিএল বলেছে, এই উদ্যোগ শ্রেণিকক্ষে সরাসরি শিক্ষাদানে সময় বাড়াতে সহায়ক হবে। তবে এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অমীমাংসিত।
যুক্তরাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক পেশাগত সংস্থা বিসিএস বলেছে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলেও শিক্ষকরা ঠিক কীভাবে অভিভাবকদের জানাবেন যে তারা এআই ব্যবহার করেছেন, সে বিষয়ে পরিষ্কার নির্দেশনার প্রয়োজন আছে।
নতুন নির্দেশনায় শিক্ষকরা অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে রুটিন চিঠি লেখার ক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। যেমন— একটি স্লাইডে দেখানো হয়েছে কীভাবে একজন শিক্ষক এআই-এর সাহায্যে আগের চিঠির ভাষা ও ভঙ্গি অনুসরণ করে উকুন ছড়ানোর বিষয়ে নতুন চিঠি তৈরি করতে পারেন।
এআই ও ডিজিটাল কৌশল নিয়ে কাজ করা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরামর্শক এমা ডার্সি বলেন, শিক্ষার্থীরা যেহেতু অনেক বেশি এআই ব্যবহার করছে, শিক্ষকদেরও এর ব্যবহার শেখা প্রায় নৈতিক দায়িত্ব।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এআই তথ্য, উক্তি কিংবা বাস্তবতা বানিয়ে ফেলতে পারে, তাই সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্ভর হওয়া যাবে না।
এছাড়া ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা এবং মার্কিংয়ে ভুলের ঝুঁকি থাকায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।
শিক্ষকরা কুইজ কিংবা হোমওয়ার্কের মতো কম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় এআই ব্যবহার করা যাবে। তবে শিক্ষককে চূড়ান্ত যাচাই করতেই হবে।
বিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন তারা শুধু অনুমোদিত এআই টুল ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে ডিপফেক ও মিথ্যা তথ্য চিনতে শেখাতে হবে। শিক্ষার্থীদের তথ্য যাচাই ও ডিজিটাল সচেতনতা শেখানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এআই ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা প্রতারণা করছে কি না, তা নির্ণয়ে শিক্ষককে নিজেই পরীক্ষা করতে হবে।
ইংল্যান্ডের শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিভাবান শিক্ষকদের হাতে অত্যাধুনিক এআই টুল তুলে দিচ্ছি, যেন তারা কাগজপত্রের কাজ থেকে মুক্ত থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও প্রেরণাদায়ী শিক্ষায় মনোযোগ দিতে পারেন।’
এএসসিএ মহাসচিব পেপে ডি’ইয়াসিও বলেন, অনেক স্কুল ও কলেজ ইতোমধ্যে নিরাপদ ও কার্যকরভাবে এআই ব্যবহার করছে। এটি তাদের কাজের চাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে।
তবে তিনি বাজেট ঘাটতির কারণে এআই ব্যবহারে বাধার আশঙ্কাও ব্যক্ত করেন।
স্কটল্যান্ড ও ওয়েলস সরকার এআইয়ের পেশাদার ও দায়িত্বশীল ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে। এদিকে, উত্তর আয়ারল্যান্ডে সম্প্রতি এক গবেষণার ঘোষণা এসেছে যেখানে এআই কীভাবে শিক্ষার্থীদের ফলাফল উন্নত করতে পারে তা মূল্যায়ন করা হবে।
ওএফ