ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর সদস্যপদের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক অনুমোদিত সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রকৌশলীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

মেজর (অব.) প্রকৌশলী মো. রিপুনুজ্জামানের নেতৃত্বে ‘প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রকৌশলী কমিটি’ এ স্মারকলিপি প্রদান করে। এতে বলা হয়, দেশে বর্তমানে ৭০টির বেশি প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং চারটি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে প্রকৌশল শিক্ষা চালু আছে। এসব প্রতিষ্ঠান ইউজিসি কর্তৃক অনুমোদিত হলেও অনেক ক্ষেত্রে তাদের প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা আইইবি সদস্যপদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, আইইবি পরিচালিত এএমআইইবি (অ্যাসোসিয়েট মেম্বার অব ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ) প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক কিংবা ল্যাব সুবিধা ছাড়াও সদস্যপদ পেয়ে থাকেন। অথচ ইউজিসি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীরা পুরোদস্তুর একাডেমিক ও ল্যাবভিত্তিক শিক্ষা অর্জনের পরেও সদস্য হতে পারছেন না। এতে করে পেশাগত ন্যায্যতা ও সমান সুযোগ ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

স্মারকলিপিতে দুইটি মূল দাবি উত্থাপন করা হয়েছে-

১. যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম বিএইটিই (বোর্ড অব অ্যাক্রেডিটেশন ফর ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনিক্যাল এডুকেশন) কর্তৃক অ্যাক্রিডিটেশনপ্রাপ্ত হয়েছে, তাদের সকল শিক্ষার্থীকে (অ্যাক্রিডিটেশনের পূর্বে ও পরে পাসকৃত) আইইবি সদস্যপদ দিতে হবে।

২. যেসব প্রকৌশলী ইউজিসি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন, তাদের সবাইকে সদস্যপদ দিয়ে শিক্ষাগত মর্যাদায় সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি), আমেরিকান সোসাইটি অব হিটিং, রেফ্রিজারেটিং অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসএইচআরএই), ন্যাশনাল ফায়ার প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশন (এনএফপিএ), ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স (আইএইএনজি)-এর মতো দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রে এমন কোনো বৈষম্য করে না। অথচ আইইবি সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধরণভেদে বৈষম্য করা হয়, যা সংবিধানের ১৯(১) ও ৪০ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের শামিল।

আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আলোচনার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে স্মারকলিপিতে চলমান বৈষম্য দূর করার জন্য আইইবি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। স্মারকলিপির কপি আইইবি সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, বিএইটিই চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষা, পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিতে সদস্যপদ বণ্টন এক ধরনের বৈষম্য এবং এটি দেশের প্রকৌশল পেশাকে দুর্বল করার সমান। সদস্যপদ পাওয়ার ক্ষেত্রে সমতা ও স্বীকৃতি নিশ্চিত করতেই এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

মোহাম্মদ নেসার/এইচকে/এমএইচএস