জাতীয় বেতন স্কেলে বৈষম্য : প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বঞ্চিত

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৩:৫০
-688094305634f.jpg)
দেশব্যাপী পরিচালিত ৭৪টি এমপিওভুক্ত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেলে চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন—এমন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
সম্প্রতি রাজধানীতে আয়োজিত কর্মসূচিতে শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের অধীন এসব বিশেষায়িত বিদ্যালয়ে প্রায় ১৪ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ৯৪২ জন কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীর মাধ্যমে। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তাদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।
তারা অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হলেও তা বাস্তবে চালু হয় ২০১৮ সালে, তাও দুই বছরের বকেয়া পাওয়ার পর আবার অতিরিক্ত ২০ শতাংশ হারে অংশগ্রহণমূলক ভবিষ্যত তহবিল (কনট্রিবিউটরি প্রোভিডেন্ট ফান্ড) কেটে রাখা হয়েছে। বিষয়টির এখনো কোনো সঠিক ব্যাখ্যা দেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষক-কর্মচারীদের আরও অভিযোগ, টাইমস্কেল, পদোন্নতি, উৎসব ভাতা, পেনশন, ইনক্রিমেন্টসহ ন্যায্য অধিকাংশ সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত রয়েছেন। অনেক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কোনো পেনশন বা গ্র্যাচুইটি না পেয়ে খালি হাতে বিদায় নিয়েছেন। কেউ কেউ আবেদন করেও বছরের পর বছর এসব সুবিধা পাননি।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের ‘প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা’ অনুযায়ী সরকারি সব ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
তারা জানান, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আইন ২০২৩-এর খসড়া অর্গানোগ্রামে বিদ্যালয়গুলোর অন্তর্ভুক্তির কথা বলা হলেও বাস্তবে নাম রাখা হয়নি। এতে ভবিষ্যতে সরকারি স্বীকৃতি বা সুবিধা পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
এ অবস্থায় তারা সরকারের কাছে ১২ দফা দাবি তুলে ধরেছেন। দাবিগুলো হলো—
১. ফাউন্ডেশন আইন ২০২৩-এর বিধিমালা ও অর্গানোগ্রামে এমপিওভুক্ত ৭৪টি বিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা।
২. ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূর্ণ বকেয়া বেতন প্রদান।
৩. স্থায়ী পদে থাকা ৯৪২ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নাম বোর্ড সভায় উপস্থাপন।
৪. ২৫ শতাংশ বকেয়া উৎসব ভাতা প্রদান।
৫. অংশগ্রহণমূলক ভবিষ্যত তহবিলের (কনট্রিবিউটরি প্রোভিডেন্ট ফান্ড) জমাকৃত অর্থ নিজস্ব ব্যাংকে ছয় মাস পরপর হস্তান্তর।
৬. অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন ও গ্র্যাচুইটি প্রদান।
৭. পদোন্নতি, টাইমস্কেল ও ইনক্রিমেন্ট কার্যকর করা।
৮. প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরিচালন ব্যয়ের জন্য সরকারি বরাদ্দ।
৯. শিক্ষক-কর্মচারীদের ইনডেক্স নম্বর প্রদান।
১০. ২০০৯ সালের আগে নিয়োগপ্রাপ্ত নন-বিএসএড শিক্ষকদের পূর্ণ বেতন প্রদান।
১১. প্রধান শিক্ষকদের সপ্তম গ্রেডে উন্নীত করা।
১২. শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলির সুযোগ চালু করা।
দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।