Logo

শিক্ষা

ন্যূনতম শিক্ষার্থী না পাওয়ার শঙ্কা

একাদশে শূন্য থাকছে এক তৃতীয়াংশ আসন

Icon

তরিকুল ইসলাম সুমন

প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪০

একাদশে শূন্য থাকছে এক তৃতীয়াংশ আসন

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল থেকে অনলাইনে এ আবেদন শুরু হয়েছে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় কম শিক্ষার্থী পাস করায় অনেক কলেজে দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে শঙ্কা। এক্ষেত্রে দেশে প্রায় ২৫ লাখ আসন থাকলেও পরীক্ষার্থী কম পাস করায় চলতি শিক্ষাবর্ষে ৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৪৭ আসন শূন্য থাকছে।

নীতিমালা অনুযায়ী, ১১ আগস্ট পর্যন্ত ভর্তির আবেদন করা যাবে। অনলাইনে নির্বাচনের পর মূল ভর্তি কার্যক্রম আগামী ৭ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। আর ক্লাস শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। অনলাইন ব্যতীত ম্যানুয়ালি কোনো ভর্তি কার্যক্রম করা হবে না।

এদিকে গত বছরের চেয়ে এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় পৌনে চার লাখ কম হওয়ায় এবার সারাদেশের কলেজগুলোর একটি বড় অংশই আসন অনুযায়ী শিক্ষার্থী পাবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। গত বছর (২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সারাদেশে মোট ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী পাস করেছিল। এর মধ্যে এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এরপর ফল পুনর্নিরীক্ষণে আরও এক হাজারের মতো শিক্ষার্থী পাস করে। গত শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কলেজ, মাদ্রাসা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে প্রায় ২৫ লাখ আসন ছিল। আবার উত্তীর্ণদের সবাই ভর্তিও হয় না। গত বছর সারা দেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে ১৩ লাখ ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করেছিল। তাদের মধ্যে মোট তিন ধাপে মোট ১৩ লাখ ২২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছিল।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানিয়েছেন, সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতেই ২৫ লাখের মতো আসন রয়েছে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড থেকে জানা গেছে, গত বছর সারা দেশের ২২০টির মতো কলেজ ও সমমানের প্রতিষ্ঠান একজন শিক্ষার্থীও পায়নি। আরও অন্তত ৫শ’র মতো কলেজ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ১০ জন থেকে সর্বোচ্চ ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল। এবার সে ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হাজার ছাড়াতে পারে বলে শিক্ষা বোর্ডের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সর্বোচ্চ ভর্তি ফি সাড়ে ৮ হাজার টাকা

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নীতিমালায় এবারও ভর্তিতে সর্বোচ্চ ফি ৮ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকাভেদেও ভর্তির ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার ইংরেজি ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো সর্বোচ্চহারে ভর্তি ফি নিতে পারবে। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার বাংলা ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো একাদশে ভর্তিতে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৫০০ টাকা ভর্তি ফি নিতে পারবে। অন্য মেট্রোপলিটন এলাকার বাংলা ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিতে পারবে। জেলা পর্যায়ের বাংলা ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো ৩ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনের নন-এমপিও কলেজগুলো ৪ হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়ের বাংলা ভার্সন নন-এমপিও কলেজ ২ হাজার ৫০০ টাকা ও ইংরেজি ভার্সন নন-এমপিও কলেজ ৩ হাজার টাকা ফি নিতে পারবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটনের এমপিওভুক্ত কলেজে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তির ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা। অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকার এমপিওভুক্ত কলেজে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিতে পারবে। আর জেলা পর্যায়ের বাংলা ভার্সনের এমপিওভুক্ত কলেজ ও ইংরেজি ভার্সনে এমপিওভুক্ত কলেজ ২ হাজার টাকা ফি নিতে পারবে। উপজেলা পর্যায়ের বাংলা ভার্সনে এমপিওভুক্ত কলেজ ১ হাজার ৫০০ টাকা ও ইংরেজি ভার্সন এমপিওভুক্ত

কলেজ সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ টাকা ফি নিতে পারবে।

পুনর্নিরীক্ষণের আবেদনকারীদেরও এখন ভর্তির আবেদন

নীতিমালায় বলা হয়েছে, যারা পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করবে, আবেদনের যোগ্য হলে তাদেরও এই সময়ের মধ্যে ভর্তির আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদনগুলো শিক্ষার্থীর পছন্দক্রম অনুযায়ী 'অটো মাইগ্রেশন' প্রযোজ্য। আবেদন যাচাই-বাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তি হবে আগামী ১২ আগস্ট। শুধু পুনর্নিরীক্ষণে ফল পরিবর্তিত শিক্ষার্থীদের আবেদন আগামী ১৩-১৪ আগস্ট। পছন্দক্রম পরিবর্তনের সময় আগামী ১৫ আগস্ট। প্রথম পর্যায়ে ভর্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ আগামী ২০ আগস্ট রাত ৮টায়।

শিক্ষার্থীর নির্বাচন নিশ্চায়ন ফল প্রকাশের পর থেকে ২২ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত (শিক্ষার্থী নিশ্চায়ন না করলে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন এবং আবেদন বাতিল হবে এবং তাকে পুনরায় ফিসহ আবেদন করতে হবে)। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন ২৩-২৫ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত। পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ ২৮ আগস্ট রাত ৮টায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ ২৮ আগস্ট রাত ৮টায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীর নির্বাচন নিশ্চায়ন ২৯-৩০ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত (শিক্ষার্থী নিশ্চায়ন না করলে দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্বাচন ও আবেদন বাতিল হবে: সেক্ষেত্রে তাকে পুনরায় ফিসহ আবেদন করতে হবে)। তৃতীয় পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। পছন্দক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ ৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ ৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় এবং নির্বাচন নিশ্চায়ন ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা (শিক্ষার্থী নিশ্চায়ন না করলে তৃতীয় পর্যায়ের নির্বাচন ও আবেদন বাতিল হবে)। সর্বশেষ মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ ৫ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় এবং ভর্তি ৭-১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু ১৫ সেপ্টেম্বর।

ভর্তির যোগ্যতায় বলা হয়েছে, যে কোনো শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের সাল ও ধারাবাহিকভাবে পূর্ববর্তী দুই সালের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নীতিমালার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে কোনো কলেজ ও সমমানের প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে। বিদেশি কোনো বোর্ড বা অনুরূপ কোনো প্রতিষ্ঠান হতে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক তার সনদের মান নির্ধারণের পর উল্লিখিত শর্তের অধীনে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ এর যে কোনোটি এবং সাধারণ ও মুজাব্বিদ মাহির বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগ ব্যতীত যে কোনোটি পছন্দক্রম দিতে পারবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের যে কোনো বিভাগে ভর্তির আবেদন করতে পারবে।

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর