কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন সময়ের দাবি : মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৪৫

আদর্শ নাগরিক গড়া ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কওমি মাদরাসা। এই কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন সময়ের অপরিহার্য দাবি।
বাংলাদেশের কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা দেশের আদর্শ নাগরিক। দেশের সেবা করা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ তাদের একটি ন্যায্য অধিকার ও ন্যায়সঙ্গত দাবি।
দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে 'ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি' বিষয়ে এমফিল ও পিএইচডি করা এবং অন্য যেকোনো বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দান অতীব প্রয়োজন।
দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষক পদে নিয়োগদান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বিভিন্ন ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দান, সরকারি মসজিদ ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহের মসজিদের ইমাম ও খতিব পদে নিয়োগ দান, সামরিক-আধাসামরিক বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীতে ধর্মীয় শিক্ষক পদে নিয়োগ দান, মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) পদে নিয়োগ দানে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া সময়ের অপরিহার্য দাবি।
দেশে এখন বিভিন্ন সংস্কার চলছে। সেই হিসেবে আমরাও আশা রাখি, কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়নে অতি দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে সরকার।
গত ৫ মে-২৫ আল-হাইআতুল উলয়ার পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে আমরা ধর্ম উপদেষ্টা আ.ফ.ম. খালিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে উপরোক্ত বিষয়ের আলোচনা করেছি। তিনি উপরোক্ত প্রস্তাবনাগুলোকে স্বাগত জানিয়েছেন।
এর আগে বিগত সরকারের আমলে ২০১৭ সালে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সনদ দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্স ডিগ্রির সমমান দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে এ-সংক্রান্ত একটি গেজেট প্রকাশিত হয়, যা কওমি সনদের সরকারি স্বীকৃতির আইনি বৈধতা প্রদান করে।
এই স্বীকৃতি কওমি শিক্ষার্থীদের ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিষয়ে এমএ ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ করে দেয় এবং কওমি মাদরাসার স্বকীয়তা বজায় রেখে সনদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। আইনি স্বীকৃতি পেলেও কওমি সনদের যথাযথ মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।
কওমি মাদরাসার শিক্ষা বিষয়ে বিগত সরকারের আমলে অগ্রগতি লাভ করা পদক্ষেপগুলো বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আরো অগ্রসর করুক, বেগবান করুক এ প্রত্যাশা সবার।
লেখক : সহসভাপতি, কওমি শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ
আইএইচ/