Logo

শিক্ষা

মুহতামিমদের শিক্ষক নিপীড়ন বন্ধ জরুরি

Icon

রায়হান আল ইমরান

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৪:০৫

মুহতামিমদের শিক্ষক নিপীড়ন বন্ধ জরুরি

কওমি মাদরাাসা ইসলামিক শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক দীক্ষার সমন্বিত ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান। এখান থেকেই যুগে যুগে ছড়িয়ে পড়েছে কুরআন-হাদিসের সুবাস। যা মানুষকে আহ্বান করে সত্যের পথে এবং নৈতিক উৎকর্ষের দিকে উত্তরণ ঘটায়। 

নববি শিক্ষার আদলে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যাপীঠ কোনো সাধারণ শিক্ষাকেন্দ্র নয়; এটি আত্মশুদ্ধি, আদর্শ ও নেতৃত্বগঠনের এক অনন্য কেন্দ্র। এখান থেকেই প্রতি বছর অসংখ্য ছাত্র আলেম হয়ে বের হন; সমাজে সত্যের পতাকা হাতে ধারণ করে ন্যায়ের প্রতীক হয়ে। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, আজ কিছু জায়গায় এই মহান প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক-নিপীড়নের ভয়াবহ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

বর্তমান বাস্তব চিত্র: কিছু মুহতামিম (পরিচালক) নিজেদের এমন অবস্থানে কল্পনা করতে শুরু করেছেন, যেন তারা প্রতিষ্ঠানের মালিক। অথচ তারা কেবল একজন অভিভাবক ও আমানতদার; আল্লাহর দেওয়া একটি দায়িত্বের বাহক। কোথাও দেখা যায়, শিক্ষকরা অকারণেই অপমানিত হচ্ছেন, সম্মানহানি ঘটছে। মাসিক হাদিয়া নিয়ে অন্যায্য আচরণ করা হচ্ছে। এমনকি মতভিন্নতা প্রকাশ করলে হুমকি বা চাকরিচ্যুতির ভয় দেখানো হচ্ছে। এই প্রবণতা কওমি মাদরাসার আদর্শিক ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে; যা ছিল বিনয়, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা এবং পরামর্শের মর্মে গঠিত।

প্রতিকার ও করণীয় পরামর্শ : বর্তমান এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য কওমি নেতৃস্থানীয় আলেমদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সমাধানের পথ খোঁজা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কিছু পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।

১. শিক্ষকদের মর্যাদা নিশ্চিত করা : মনে রাখতে হবে শিক্ষকরা সাধারণ কর্মচারী নন; বরং তাঁরা দ্বীনের বাহক। তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান, পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক ও ন্যায্য স্বীকৃতি প্রদান আবশ্যক।

২. পরামর্শভিত্তিক পরিচালনা ব্যবস্থা : মাদরাসার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো এককভাবে নয়; শূরা বা পরামর্শ পরিষদের মাধ্যমে গ্রহণ করা উচিত। এতে ভারসাম্য বজায় থাকে, পরিচালনায় অনৈতিক ব্যবহার রোধ হয়।

৩. দায়িত্বের জবাবদিহি : মুহতামিমদের মনে রাখতে হবে, মাদরাসা তাদের সম্পত্তি নয়; বরং আল্লাহর একটি আমানত। তাই যে-কোনো অনৈতিক সিদ্ধান্তের আগে আত্মসমালোচনা জরুরি।

৪.  সাংগঠনিক নজরদারি ও ন্যায়বিচার : কেন্দ্রীয় বোর্ড বা শিক্ষা পরিষদগুলোর উচিত মাদরাসার অভ্যন্তরীণ ন্যায়সংক্রান্ত বিষয়ে সক্রিয় তদারকি করা, যেন কোনো শিক্ষক নির্যাতনের শিকার না হন।

৫. আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়ার চর্চা : নেতৃত্বের প্রথম শর্ত হলো বিনয় ও আত্মশুদ্ধি। সকল মুহতামিমেরই উচিত নিজের অবস্থান নববি মিশনের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা, আমি কি খিদমতের সঙ্গে জড়িত না-কি আত্যম্ভরিতার সঙ্গে।

লেখক: লেখক ও গবেষক, কনট্রিবিউটর, প্রথম আলো

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

মাদরাসা শিক্ষা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর