দিলরুবা খাতুন
প্রধান শিক্ষক
ধাদাশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুঠিয়া, রাজশাহী।
পাঠ: ব্যঞ্জনবর্ণের ক্রমিক পুনরালোচনা ও অনুশীলন
পাঠ নং: ৩৯ (ব্যঞ্জনবর্ণের তালিকা)
সময়: ৪৫ মিনিট
১. শিখনফল:
এই পাঠ শেষে শিক্ষার্থীরা-
১.১.১ প্রমিত উচ্চারণে বলা বাংলা বর্ণমালার ব্যঞ্জনধ্বনি (ক থেকে ৎ/ ঁ) মনোযোগ সহকারে শুনে শনাক্ত করতে পারবে এবং ক্রমানুসারে সাজাতে পারবে।
১.১.২ বাংলা বর্ণমালার ব্যঞ্জনবর্ণ (ক থেকে ৎ/ ঁ) ক্রমানুসারে স্পষ্ট স্বরে ও শুদ্ধ উচ্চারণে পড়তে পারবে।
১৩.১.২ ক্রমানুসারে বাংলা বর্ণমালা (ক থেকে ৎ/ ঁ) লিখতে পারবে।
২. উপকরণ:
-ব্যঞ্জনবর্ণ চার্ট/পোস্টার: সম্পূর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণের তালিকা (ক থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত)।
- ব্যঞ্জনবর্ণের ফ্ল্যাশ-কার্ড: সম্পূর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণের সেট (কমপক্ষে ৫ সেট), এলোমেলো করা থাকবে।
-সাদা বোর্ড/ব্ল্যাক বোর্ড এবং চক/মার্কার।
৩. পদ্ধতি/কৌশল:
দ্রুত পড়া, বর্ণ সাজানো, ক্রমানুসারে বর্ণ লেখা, দলীয় প্রতিযোগিতা।
৪. পাঠের ধাপসমূহ:
৪.১. স্বাগত (৫ মিনিট)
- শিক্ষক হাসিমুখে ক্লাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের সম্ভাষণ জানাবেন।
-শিক্ষক শারীরিক অঙ্গভঙ্গিসহ একটি সহজ ‘বর্ণের খেলা’ (যেমন: শিক্ষক একটি বর্ণ বললে শিক্ষার্থীরা সেই বর্ণের মতো আকার ধারণ করার চেষ্টা করবে) পরিচালনা করে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করবেন।
পূর্ব প্রস্তুতি: শিক্ষক বোর্ডে সম্পূর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণের তালিকা (ব্যঞ্জনবর্ণ চার্ট থেকে) লেখার প্রস্তুতি নেবেন এবং ফ্ল্যাশ-কার্ডগুলো এলোমেলো করে রাখবেন।
৪.২. পূর্বজ্ঞান যাচাই (৫ মিনিট)
- শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পূর্বের পাঠের শেখা কিছু ব্যঞ্জনবর্ণের (যেমন: ড়, ঢ, য়, ং, ঃ, ঁ) নাম প্রমিত উচ্চারণে জিজ্ঞেস করবেন।
- শিক্ষক বর্ণমালার যেকোনো একটি অংশ (যেমন: প-বর্গ) থেকে দ্রুত বর্ণগুলো বলতে বলবেন।
- শিক্ষক প্রশ্ন করবেন: “সবচেয়ে প্রথমে কোন ব্যঞ্জনবর্ণটি আসে?” (উত্তর: ক), “সবচেয়ে শেষে কোন বর্ণটি আসে?” (উত্তর: ঁ)।
৪.৩. পাঠ ঘোষণা (২ মিনিট)
- শিক্ষক ব্যঞ্জনবর্ণ চার্টটি দেখিয়ে বলবেন: আমরা এতদিনে বাংলা বর্ণমালার সবগুলো ব্যঞ্জনবর্ণ শিখে ফেলেছি। আজ আমরা সেই সবগুলো বর্ণকে একসাথে দেখব, সঠিক উচ্চারণে পড়ব এবং দ্রুত ক্রমানুসারে সাজিয়ে লেখা অনুশীলন করব। আজ আমাদের পাঠ হলো ব্যঞ্জনবর্ণের ক্রমিক পুনরালোচনা।
৪.৪. শিখন-শেখানো কার্যাবলী (২৫ মিনিট)
৪.৪.১. শিক্ষকের আদর্শ পাঠ ও দ্রুত পঠন (৫ মিনিট)
আদর্শ পাঠ: শিক্ষক ব্যঞ্জনবর্ণ চার্ট বা বোর্ডে লেখা তালিকা দেখে ক থেকে ঁ পর্যন্ত প্রতিটি বর্ণ স্পষ্ট স্বরে ও শুদ্ধ উচ্চারণে একবার পড়ে শোনাবেন।
দ্রুত পঠন অনুশীলন: শিক্ষক এরপর ‘দ্রুত পড়া’ পদ্ধতি অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ছন্দের তালে তালে সবগুলো বর্ণ দ্রুত উচ্চারণ করবেন।
৪.৪.২. দলীয় প্রতিযোগিতা: বর্ণ শনাক্তকরণ ও সাজানো (১০ মিনিট)
দলীয় কাজ: শিক্ষার্থীদের ৫টি ছোট দলে ভাগ করা হবে। প্রতিটি দলকে এক সেট এলোমেলো ব্যঞ্জনবর্ণের ফ্ল্যাশ-কার্ড দেওয়া হবে।
গেম: শিক্ষক বাঁশি বা হাততালি দেওয়ার সাথে সাথে দলগুলো দ্রুততম সময়ে কার্ডগুলো ক্রমানুসারে (ক, খ, গ... ড়, ঢ... ং, ঃ, ঁ) সাজাবে।
শিক্ষক প্রতিটি দলের কাছে গিয়ে তাদের সাজানো বর্ণগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন এবং প্রমিত উচ্চারণে তাদের বলতে বলবেন।
৪.৪.৩. ক্রমানুসারে লেখার অনুশীলন (১০ মিনিট)
ক) একক কাজ: শিক্ষক বোর্ডে ব্যঞ্জনবর্ণের প্রথম কয়েকটি বর্ণ লিখে দেবেন (ক, খ, গ, ঘ...) এবং বাকি ঘরগুলো ফাঁকা রাখবেন।
- শিক্ষার্থীরা তাদের খাতায় সম্পূর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণের তালিকা ক্রমানুসারে লেখার চেষ্টা করবে।
- শিক্ষক ঘুরে ঘুরে শিক্ষার্থীদের লেখার সঠিক ক্রম এবং আকৃতি পর্যবেক্ষণ করবেন।
৪.৫. মূল্যায়ন (৫ মিনিট)
ক) মৌখিক মূল্যায়ন:
১) শিক্ষক বোর্ডে বা চার্টে আঙ্গুল দিয়ে একটি বর্ণ দেখাবেন এবং শিক্ষার্থীকে প্রমিত উচ্চারণে সেই বর্ণটি শনাক্ত করে বলতে বলবেন।
২) শিক্ষক যেকোনো একটি বর্গ (যেমন: চ-বর্গ) থেকে বর্ণগুলো ক্রমানুসারে বলতে বলবেন।
খ) লিখিত মূল্যায়ন:
১) শিক্ষক শিক্ষার্থীদের খাতার লেখা দ্রুত দেখবেন এবং ক্রমানুসারে লিখতে পারা শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করবেন।
২) শিক্ষক বোর্ডে কিছু বর্ণ এলোমেলো করে লিখে তা ক্রমানুসারে লিখতে বলবেন।
৪.৬. বাড়ির কাজ (২ মিনিট)
- শিক্ষার্থীরা তাদের খাতায় ক থেকে ম পর্যন্ত ব্যঞ্জনবর্ণগুলো ক্রমানুসারে দুবার করে লিখে আনবে।
- বাড়ির কাজ করার সময় প্রতিটি বর্ণ শুদ্ধ উচ্চারণে বলার অভ্যাস করবে।
৪.৭. সমাপ্তি ঘোষণা (১ মিনিট)
- শিক্ষক আজকের সফলভাবে সবগুলো ব্যঞ্জনবর্ণের পুনরালোচনার জন্য শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাবেন।
-শিক্ষক উৎসাহ দিয়ে বলবেন, তোমরা এখন বাংলা লিখতে ও পড়তে পারার জন্য প্রস্তুত! এইভাবেই শিখতে থাকো।
বিকেবি/এমবি

